নয়াদিল্লি: গুণমানের পরীক্ষায় (Quality Test) পাশ হল না ৪৮টি বহুল ব্যবহৃত ওষুধ (Medicine)। লাল দাগ কেন্দ্রীয় সংস্থার। সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন-এর (CDSCO) তরফে এ নিয়ে সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বা দি সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO) প্রতি মাসে দেশজুড়ে বিভিন্ন ওষুধ ও চিকিৎসা যন্ত্রের নমুনা পরীক্ষা করে। মার্চ মাসেও সিডিএসসিও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন ১ হাজার ৪৯৭টি ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে তা পরীক্ষার জন্য পাঠায়। তাতে দেখা যায় গুণমান পরীক্ষায় পাশ গিয়েছে ১ হাজার ৪৪৯টি ওষুধ (Medicine)। ৪৮টি নিত্য ব্যবহৃত ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। কদিন আগেই জাল ওষুধ তৈরির অভিযোগে ১৮টি ফার্মা কোম্পানির (Pharma Companies) লাইসেন্স বাতিল করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নিয়ামক সংস্থা ডিসিজিআই (DCGI)।
CDSCO-র ওয়েবসাইটে পরীক্ষায় উতরোতে না পারা ওষুধের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিকস, অ্যান্টি ডায়বেটিক, ক্যালসিয়াম, কার্ডিয়াক ওষুধ। মৃগীরোগে বহুল ব্যবহৃত গাবাপেন্টিন, হাইপারটেনশনে ব্যবহৃত টেলমিসার্টান, অ্যান্ডি ডায়বিটিস কম্বিনেশন গ্লিমেপিরাইড এবং মেটফর্মিনের মতো ওষুধ রয়েছে তালিকায়। আবার এইচআইভি (HIV)-র রিটোনেভির ওষুধও ব্যর্থ হয়েছে পরীক্ষায়। এ ছাড়াও, ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট, প্রোবায়োটিক্স এবং মাল্টিভিটামিন হিসেবে ব্যবহৃত একাধিক ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে পরীক্ষায়। ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ১২, ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড ইঞ্জেকশনও পরীক্ষায় উতরোতে পারেনি বলে জানানো হয়েছে। অ্যামোক্সিসিলিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি৩ ট্যাবলেট, টেলমিসার্টান ট্যাবলেট এবং আলবেনডেজোল ট্যাবলেটও ব্যর্থ পরীক্ষায়।
CDSCO-র তালিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের এক মুখপাত্র জানান, বিষয়টে তাদের অগোচরে নেই। কিন্তু টেলমা এ এম ট্যাবলেটের যে ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে, সেটি জাল ওষুধ। গ্লেনমার্ক ওই ব্যাচের ওষুধ তৈরি করেনি। CDSCO-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। তালিকা থেকে যাতে তাদের ওষুধের নাম সরিয়ে দেওয়া হয়, অনুরোধ জনানো হয়েছে তার জন্যও। অ্যাবট ইন্ডিয়া-র তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে থাইরোনর্ম ট্যাবলেটের (থাইরক্সিন সোডিয়াম) একটি ব্যাচ বাজার থেকে তুলে নিয়েছে তারা। যে ব্যাচটি তুলে নেওয়া হয়েছে, সেটি AEJ0713. তারিখ ছিল ২০২৩-এর মার্চ। হাইপোথাইরোডিসমে ওই ওষুধ ব্যবহৃত হয়। সংস্থার দাবি, ওই ব্যাচের ওষুধ শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশ এবং তেলাঙ্গনাতেই বিক্রি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ভারতের সংস্থার তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে উজবেকিস্তানে ১৮টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। নয়ডার ওই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তিন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে একটি সংস্থার চোখের ড্রপে বিষাক্ত উপাদান মেলে। এই ধরনের একাধিক ঘটনা সামনে আসার পর ওষুধের গুণমান বিচারে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। সেই সূত্রেই সম্প্রতি ১,৪৯৭টি ওষুধের গুণমান পরীক্ষা করা হয়। তারপরেই CDSCO ওষুধের তালিকা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১,৪৪৯টি ওষুধ গুণমানের পরীক্ষায় পাশ করেছে। অর্থাৎ কালো তালিকাভুক্ত হয়েছে ৪৮টি ওষুধ।