Written By শৌভিক পাণ্ডা
গড়িয়া মিতালি সংঘ পরিচালিত নবদুর্গা এবছর ৭৯ তম বর্ষে পদার্পণ করল।
তাদের এবারের থিম ‘যুদ্ধ নয় বুদ্ধ’। প্রতিবছর দেবী দুর্গার ৯টি রূপের মাধ্যমে এরা ব্রতী হন মাতৃ আরাধনায়। ক্লাবের সম্পাদক মহাদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্গ কথার একটি অর্থ হল বিপদ। আর দুর্গার অর্থ বিপদের পরিত্রাতা দেবী। সেই মহাভারতের যুগ থেকেই আমাদের সমাজে চলে আসছে যুদ্ধ। তবে অনেক সময় প্রশ্ন দেখা দেয় তাহলে কী হিন্দু মতাদর্শ শান্তির পরিপন্থী? কিন্তু তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে শান্তিই আসল লক্ষ্য। ঠিক সেরকমই যুদ্ধের মাধ্যমে অশুভ শক্তিরূপী মহিষাসুরকে দমন করে মা দুর্গা হয়ে উঠেছিলেন মাহিষাসুরমর্দিনী। সমাজে ক্রমাগত যুদ্ধের আবহে তাই আমাদের এবারের নিবেদন, আর যুদ্ধ নয় এবার শান্তি চাই। আর শান্তি বলতেই যাঁর কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি হলেন গৌতম বুদ্ধ। তাই আমাদের এবারের ভাবনা ‘যুদ্ধ নয় বুদ্ধ’। ধ্যানমগ্ন সৃজনশীল মূর্তির সমাবেশ আমাদের পুজো মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলবে আমাদের এবারের ভাবনাকে। অসংখ্য দেবমূর্তি, অবহসঙ্গীত ও আলোকসজ্জা পরিবেশকে আরও মনোরম ও নির্মল দ্বেষহীন করে তুলবে। মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশ করলেই মানুষের মন শান্ত স্নিগ্ধ স্বর্গীয় আবহে হয়ে উঠবে স্থিতিশীল। ’
এবারের থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মণ্ডপটি তৈরি হচ্ছে একটি কাল্পনিক মন্দিরের আদলে। যেখানে মানুষ এসে মনের সব হিংসা, দ্বেষ, আক্রোশ, ক্রোধ, মায়ের পায়ে বিসর্জন দিয়ে শান্তি লাভ করবেন। এই পুজোকে ঘিরে আয়োজন করা হয় রক্তদান শিবির, দুঃস্থ বাচ্চাদের বইপত্র ও পোশাক দান। এছাড়াও পুজোর দিনগুলোতে ভোগ বিতরণ করা হয়। লক্ষ্মী পুজোতে নরনারায়াণ সেবা, বাচ্চাদের আঁকা প্রতিযোগিতা, ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ কিছু সহায়তা ও দুঃস্থদের কম্বল বিতরণ করা হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের প্রতিটি মানুষকে নিয়ে উৎসবে সামিল হওয়াই এই পুজোর অন্যতম লক্ষ্য বলে জানান মহাদেব বাবু। কবি নজরুল স্টেশনে নেমে একটু হেঁটে এসে গড়িয়া স্টেশন রোডের মুখে বরদা প্রসাদ স্কুলের মাঠে আয়োজন হয় এই পুজোর। যা গড়িয়ার নবদুর্গা বলেই সমধিক পরিচিত।