Written By সঞ্জিত চক্রবর্তী
আজ নেই রাজা, নেই রাজ্যপাটও। এক সময়ের জমিদারি শাসনে থাকা বাড়িটি এখন সরকারি নিয়ন্ত্রণে। ইতালিয়ান স্থাপত্যের মধ্যে আজও অন্যতম প্রাচীন ইতিহাস বহন করে চলেছে উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তবর্তী শহর বসিরহাটের ধান্যকুড়িয়ার জমিদার বাড়ি। আজ রাজা না থাকলেও ধান্যকুড়িয়ায় গেলে দেখা যাবে অতীতের সেই রাজ্যপাটের নিদর্শন। এর পাশাপাশি লোকনাথ ব্রহ্মচারির স্মৃতিধন্য কচুয়া ও চাকলাধামকে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
একদিকে, বসিরহাট মহকুমার দু নম্বর ব্লকের ধান্যকুড়িয়ায় শতাব্দী প্রাচীন জমিদারি নিদর্শন, যেখানে আছে প্রাচীন গ্রামীণ পরিবেশে তেরোশো বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত মহকুমার একমাত্র চতুষ্পাঠী বা টোল বা পাঠশালা। অন্যদিকে, ব্রহ্মচারী সাধক লোকনাথ দেবের জন্মস্থান চাকলা ধাম ও ত্রিকালোজ্ঞ সাধক বাবা লোকনাথের সাধন ধাম কচুয়া। এই ৩টি স্থানকে এবার রাজ্য সরকার পর্যটন দফতরের অন্তর্ভুক্ত করা হল। এরই মধ্যে রাজ্যের পর্যটন দফতরের উদ্যোগে কচুয়াধামে তার কাজ শুরু হয়ে গেছে।
বসিরহাটের প্রাচীন জায়গা গুলোর মধ্যে ধান্যকুড়িয়া অতি প্রাচীনকাল থেকেই নানান ঐতিহ্য বহন করে আসছে। অন্যদিকে, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ধান্যকুড়িয়া সাধারণ পাঠাগার একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। ৮১ বছর ধরে প্রাচীন স্থাপত্য রীতিকে বুকে ধরে ইতিহাসের অনেক কথাই পরতে পরতে জড়িয়ে রেখেছে এই পাঠাগার বলে জানান সমাজকর্মী ছন্দক বাইন। তিনি আরও বলেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ইংরেজ আমলে এই গ্রামে এসে দেশ স্বাধীন করার বীজ বপন করেছিলেন। প্রথম রাজ্যপাল হরেন মুখোপাধ্যায় ও ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় এই গ্রামে এসে গ্রামের শিক্ষার অগ্রগতি দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান।’
প্রায় ২০০ বছর ধরে এই গ্রামের বাসিন্দাদের আন্তর্জাতিক পাটের ব্যবসা। এখনও অটুট রয়েছে বিদ্যাধরীর শাখা নদীর তীরে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখিদের কিচিরমিচির। শীতকালে বিদ্যাধরীর তীরের জঙ্গলে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা এই গ্রামেও লক্ষ্য করা যায়। পর্যটকরা এই গ্রামে সারা বছর ধরে এসে এইসব দৃশ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ইতিহাসের নিদর্শনের সাক্ষী হয়ে তা ক্যামেরাবন্দি করেন। ধান্যকুড়িয়া সাধারণ পাঠাগার সম্পাদক চঞ্চল মণ্ডল জানান, ‘নকশী কাঁথা, বড়ি, গামছা, মাদুর এবং এই গ্রামের মিষ্টান্ন আজও ইতিহাস বহন করে চলেছে। সে কারণেই এই প্রাচীন ইতিহাস, ভাস্কর্য ও শিক্ষার অগ্রগতি লক্ষ্য করে ধান্যকুড়িয়াকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট ট্যুরিজমের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।’
লাইভ কলকাতা টিভি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
18th September, 2019 12:50 pm