Written By শাজাহান আলি
পুজোর আগে থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লকে হাজির হয়েছিল দলমা থেকে একটি বড় হাতির পাল ৷ মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া রেঞ্জের বনকর্মীদের ঘুম উড়িয়ে এদিক ওদিক দাপিয়ে বেড়াতে থাকে হাতির পালটি ৷ পুজোর পরে সেই পালটিকে তাড়াতে গিয়ে বিপত্তি বাধে একটি শাবককে ঘিরে ৷ পালের সঙ্গে না পালাতে পেরে ঝোপে আটকে পড়েছিল সে ৷ আর তাকে উদ্ধার করতে দিনভর হিমসিম খেতে হল বনকর্মী ও হুলাপার্টিকে ৷ পুজো শেষ হতেই বৃহস্পতিবার হাতির পালটিকে তাড়ানো শুরু করে বনকর্মীরা ৷ বনদফতর সূত্রে খবর, এই পালে ৫০টি হাতি রয়েছে৷ রয়েছে শাবকও৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ২৫জন হুলাপার্টির কর্মীরা হাতির পালটিকে তাড়ানো শুরু করে৷ পালটিকে ঝরিয়া থেকে বাঘঘরা পর্যন্ত তাড়িয়ে প্রায় ৪কিমি দুরে পাঠিয়ে দেয় প্রথম ধাপে৷ তারপরই সমস্যা দেখা দেয় ৷ হাতির পালটির একটি দাঁতাল হাতি দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ৷ তাকে পাঠাতে বেগ পেতে হয় কর্মীদের ৷ বনকর্মীরা বুঝতে পারে কোনো সমস্যা হয়েছে ৷ এসে বুঝতে পারে একটি শাবক গর্জন করছে ৷ তাকে উদ্ধার করে পালের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করে বনকর্মীরা ৷ দুটি হাতি তাড়ানোর ঐরাবত গাড়ি ও অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করে শাবকটিকে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয় বনকর্মীদের ৷ মা ছাড়া শাবকটি হিংস্র হয়ে বনকর্মী ও হুলাপার্টির কর্মীদের তাড়িয়ে বেড়ায়৷ কয়েকজন শাবকটির তাড়াতে পালাতে গিয়ে জখমও হয় ৷ বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঝরিয়ার জঙ্গলে বনকর্মীদের এভাবেই হয়রান হতে হয় ৷ শেষ পর্যন্ত বনকর্মীরা সিদ্ধান্ত নেন- শাবকটিকে ধরে ঝাড়গ্রামে পার্কে পাঠানো হবে। কিন্তু সেই চেষ্টা করেও এখনও সম্ভব হয়নি৷ বনদফতরের এককর্মী সুশান্ত মাহাতো বলেন, “আমরা সকলেই চেষ্টা করেছি শাবকটিকে ধরতে। কিন্তু শাবকটি হিংস্র হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করব ৷ শাবকটিকে না ফেরাতে পারলে শাবকটি মারাও পড়তে পারে ৷ শাবকটির মা হাতিটিও হিংস্র হয়ে যেতে পারে৷' এই বিষয়টি জানতে পেরে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরাও ৷ ঝরিয়া,শির্ষি,বাঘঘরা গ্রামের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন, কারণ শাবক হারা মা হাতি গ্রামে আক্রমণ করতে পারে। এর আগে এই এলাকায় হাতির আক্রমনে বহু বাড়ি, বিদ্যালয় নষ্ট হয়েছে ৷ মারাও পড়েছেন কয়েকজন ৷ সন্ধের পর বাচ্চা হাতিটিকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম ডিয়ার পার্কে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।