কলকাতা: ২৩ দিন ভর্তি রোগীর জন্য ১৯৭টি অন্তর্বাস! রোগীর মৃত্যুর পর ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৬টি। অর্থাৎ ১৯১টি অন্তর্বাস ২৩ দিনে পরানো হয়েছে একজন রোগীকে। দৈনিক হিসেব অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ৮- ৯টা করে অন্তর্বাস পরানো হয়েছে। সত্যিই সম্ভব? সংখ্যাটা শুনেই চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। কারণ স্বভাবিক ভাবে দৈনিক ৯টি অন্তর্বাস কোনও হাসপাতালেই পরানো হয় না। কিন্তু এমনটাই অভিযোগ উঠেছে সল্টলেক আমরি (AMRI) হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ২৩ দিন আগে কমোরবিডিটি নিয়ে সল্টলেক আমরি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বছর ৫৬-র সুনন্দা খান্ডেলওয়াল। তাঁর মৃত্যুর পর বেশ কিছু অভিযোগ নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হন পরিবারের লোকেরা। তারই আজ শুনানি ছিল কমিশনে।
রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। কিন্তু রোগীর বাড়ির লোকেদের হাসপাতালে ডেকে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, কমিশনে অভিযোগ করে কোনও লাভ হবে না। কমিশনের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। মোট যে খরচ বলা হয়েছিল তা থেকে ৭০ হাজার টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর বেশি ছাড় দেওয়া যাবে না, আপনারা অভিযোগ তুলে নিন! সল্টলেকের এই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ আসার পরেই স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায় কমিশন। আর তারপরই ওই হাসপাতালকে সতর্ক করা হয়। সোমাবার দিন আমরির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনে।
আরও পড়ুন WB Assembly: ‘মুখ্যমন্ত্রীই আচার্য’, বিধানসভায় পাশ পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল
কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছে দেন, কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী বিল না করে অতিরিক্ত বিল করে ছাড় দেওয়া যায় না। এটা এক প্রকার ছাড় দেওয়ার নামে রোগীদের ঠকানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই আমরির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ জমা পড়ছে। এবার সতর্ক না হলে কমিশন কড়া পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়ে দেন হাসপাতালের প্রতিনিধিদের।
এই ঘটনায় সোমবার কমিশনের কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা শুনে ক্ষমা চেয়ে নেন আমরি কর্তৃপক্ষ। একদিনের মধ্যে তাঁদের সফটওয়্যার বদলে ফেলা হবে বলে কমিশনকে জানান। যদিও কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, একদিনের মধ্যেই যে কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী বিল ধার্য করা হচ্ছে কি না তা এফিডেভিট করে কমিশনকে জানাতে হবে। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে এ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন TET CBI: টেট মামলায় সিবিআই দফতরে হাজিরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং সচিবের