ইরান: চীনের মধ্যস্থতায় ইরান এবং সৌদি আরব সাত বছর পর তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছে গত শুক্রবার। এরপরই ইরানের (Iran) সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গ্রেফতার (Arrest) হওয়া ২২ হাজার বিক্ষোভকারীকে ক্ষমা (Protester Pardon ) করেছেন দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি (Ayatollah Ali Khamenei)।
সোমবার ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান গোলামহোসেন মোহসেনি এজেহি বলেন, মোট ৮২,৬৫৬ বন্দী ক্ষমা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২,০০০ জনকে আন্দোলন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের ক্ষমা করা হল। তিনি আরও বলেন বলেন, যাঁদের ক্ষমা করা হয়েছে তারা চুরি বা সহিংস অপরাধ করেননি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে হিজাব বিতর্কে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইরান। মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরলেই হিজাব পরার আদেশ দিয় ইরান সরকার। এই ব্যক্তিস্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ইরানের মেয়েরা পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেন। এরই মধ্যে ঠিকমতো হিজাব না পরার জন্য মাসা নামে বছর বাইশের এক তরুণীকে অমানবিকভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। এরপর অবস্থা আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। মেয়েরা মাথার চুল কেটে ফেলে, গায়ের পোশাক খুলে প্রতিবাদে পথে নামেন। প্রতিবাদী ভূমিকায় দেখা যায় সে দেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেরও। প্রতিবাদ রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় ইরান সরকারও। একাধিক আন্দোলনকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস সূত্রে খবর, বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তাকর্মীরা অন্তত ২০০ জনকে হত্যা করেছেন। অসংখ্য আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে ইরান সরাকর।
আরও পড়ুন : Money Can Buy Happiness | অর্থ দিয়েই সুখ কেনা যায়, গবেষণায় দাবি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের
ইরান তাদের সংবাদ মাধ্যমকে কিছুদিন আগে জানিয়েছিল, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে বিক্ষোকারীদের ক্ষমা করতে পারে। সেই মতো রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই গ্রেফতার হওয়া ২২ হাজার বিক্ষোভকারীকে ক্ষমা করা হল।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকমাস ধরেই ইরানে নারীশিক্ষা (Women Education) বন্ধ করতে মেয়েদের স্কুলগুলিতে একের পর এক গ্যাস হামলার (Gas Attacks) ও বিষ খাওয়ানোর (Poisoning) মতো অমানবিক কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে মৌলবাদীরা। সংসদীয় ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটির সদস্য মোহাম্মদ-হাসান আসাফারি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গত নভেম্বরের শেষের দিক থেকে বিষক্রিয়ায় (Poisoning) ২৩০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫,০০০ এরও বেশি স্কুলপড়ুয়ার উপর বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে।