Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
রবি ফাউলারের অধীনে প্র্যাক্টিস করছেন ইস্ট বেঙ্গল ফুটবলাররা। গোয়ায় বৃহস্পতিবার।
একটা সময় মনে হয়েছিল এ বছরে ইস্ট বেঙ্গলের পক্ষে আই এস এল খেলা সম্ভব হবে না। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে ইস্ট বেঙ্গল ঢুকে পড়েছে আই এস এল-এর বৃত্তে। এবং শুক্রবার প্রথম ম্যাচেই তাদের সামনে এটিকে মোহনবাগান, যারা শুধু গত বছরের নয়, ছয় বারের মধ্যে তিন বারের চ্যাম্পিয়ন। এ হেন একটি দুর্দান্ত দলের বিরুদ্ধে অনেক পরে দল গড়ে এবং প্র্যাক্টিসে নেমে কতটা লড়তে পারবে ইস্ট বেঙ্গল তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাও যদি তারা গ্যালারিতে সমর্থকদের সামনে খেলতে পারত তাও একটা কথা ছিল। কোভিডের কারণে গোয়ার কোনও মাঠেই দর্শকদের প্রবেশাধিকার নেই। তাই শব্দব্রম্ভের সাহায্যও পাচ্ছে না ইস্ট বেঙ্গল। সেজন্য শুক্রবার গোয়ার তিলক ময়দানে ইস্ট বেঙ্গল আন্ডারডগ হিসেবেই শুরু করবে।
তবে অতীত ঘাঁটলে দেখা যাবে এ রকম আন্ডারডগ হিসেবে মাঠে নেমে ইস্ট বেঙ্গল বহুবারই বাজিমাৎ করেছে। শুক্রবার সে রকম হবে কি না তা সময়ই বলবে। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গলের কোচ রবি ফাউলার যেভাবে দল সাজাচ্ছেন তাতে এই লিভারপুল কিংবদন্তির ছেলেরা যে বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করবে না তা অন্তত বলা যায়। গোলে ফাউলারের পছন্দ দেবজিৎ মজুমদার। এই ছেলেটি অতীতে মোহনবাগানকে আই লিগে জেতাবার ব্যাপারে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। আই এস এল-এও খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর এবং সেটা এটিকের হয়েই। ফাউলার তিন ব্যাকে খেলতে চান। এবং এ ব্যাপারে তিনি যে তিনজনের কথা ভেবেছেন তাঁরা হলেন স্কট নেভিল, ড্যানি ফক্স এবং রানা ঘরামি। নেভিল এবং ফক্স দুজনেই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। নেভিল সাধারণত রাইট ব্যাকে খেলেন। ওভারল্যাপে যান ঘনঘন। অস্ট্রেলিয়ার এ লিগে ব্রিসবেন রোরের হবে প্রচুর ম্যাচ খেলেছেন নেভিল। সেই টিমেরই কোচ ছিলেন ফাউলার। তাঁর পাশে যিনি খেলবেন সেই ড্যানি ফক্স ইংলিশ এবং স্কটিশ প্রিমিয়ার লিগে প্রচুর ম্যাচ খেলে এসেছেন। তাঁর বয়স ৩৪। তিনিই টিমের সবচেয়ে বয়স্ক প্লেয়ার। অভিজ্ঞতাও প্রচুর। তাই তাঁকেই অধিনায়ক করা হয়েছে মোহনবাগান ম্যাচে। এই দুই বিদেশির সঙ্গে তৃতীয় ব্যাক হবেন রানা ঘরামি। তাঁর উপর দায়িত্ব থাকবে রয় কৃষ্ণকে আটকাবার। প্রাথমিকভাবে রানার উপর কৃষ্ণের দায়িত্ব থাকলেও ড্যানি ফক্সও থাকবেন ব্যাক আপ হিসেবে।
ফাউলার ৩-৪-২-১ ছকে শুরু করতে চাইছেন। মাঝ মাঠে তাঁর পছন্দ চুলোভা, মাট্টি স্টেইনম্যান, ইউজেনসেন লিংডো এবং নারায়ণ দাস। জার্মানির স্টেইনম্যান মূলত ডিফেন্সিভ মিডিও। নারায়ণ দাস লেফট ব্যাকে খেলতে স্বচ্ছন্দ। তাঁকে এই কাজটা করার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ গড়ার কাজটাও করতে হবে। যে কাজটা ডান দিক দিয়ে করার কথা চুলোভার। আর লিংডো হলেন গেমমেকার। তাঁর সামনে থাকবেন দুই বিদেশি। আ্যান্টনি পিলকিংটন এবং জাক মাঘোমা। ই পি এল-এ প্রচুর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে এই দুজনের। তাঁদের সামনে একমাত্র স্ট্রাইকার বলবন্ত সিং। চোটের জন্য গত বছর খুব একটা খেলতে পারেননি বলবন্ত। কিন্তু অতীতে বড় ম্যাচে ভাল পারফরম্যান্স আছে তাঁর।
প্রথম ম্যাচেই অগ্নিপরীক্ষা ফাউলার এবং তাঁর ফুটবলারদের। এই ব্যাপারে ভারতীয়দের থেকে তাঁর বেশি ভরসা বিদেশিরা, যাঁদের তিনি চেনেন, যাঁদের তিনি নিজে পছন্দ করে নিয়ে এসেছেন। ডার্বির মাহাত্ম্য ওঁরা কে কতটা জানেন তা এখন না ভাবলেও চলবে। একেবারে খোলা মনে আর একটা ম্যাচের মতো করে ভেবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামতে চান স্কট নেভিলরা। এতে হারলে মাথায় বাজ ভেঙে পড়বে না। জিতলেও যে সব কিছু হাতের মুঠোয় এসে যাবে তা ভাবারও কারণ নেই। এই মানসকিতাটা ফুটবলারদের মধ্যে ঢোকাতে চেয়েছেন ফাউলার। সেটা তাঁর ছেলেরা কতটা মাঠে নেমে দেখাতে পারেন তার উপর নির্ভর করছে আই এস এল-এর প্রথম ডার্বিতে ইস্ট বেঙ্গলের ভাগ্য।