Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
মুম্ব্ই সিটি এফ সি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগের দিন প্র্যাক্টিসে রবি ফাউলার ও তাঁর ফুটবলাররা। সোমবার গোয়ায়।
আই এস এল-এর আবির্ভাব লগ্নে এটিকে মোহনবাগানের কাছে জোড়া গোলে হারের পর মঙ্গলবার ইস্ট বেঙ্গল মুখোমুখি হচ্ছে মুম্বই সিটি এফ সি-র। তবে মোহনবাগান ম্যাচের কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে ইস্ট বেঙ্গল শিবিরে এখন প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে একজন দক্ষ স্ট্রাইকারের অভাব।। বলবন্ত সিং কিংবা জেজে-কে দিয়ে যে আই এস এল-এর ম্যাচ জেতা যাবে না এটা প্রথম ম্যাচেই বোঝা হয়ে গেছে। ইস্ট বেঙ্গলে সাত বিদেশির মধ্যে ছয়জনকে নেওয়া হয়েছে। এখনও একজন বিদেশি তারা নিতে পারে। চেষ্টা হচ্ছে উইগান এফ সি-র স্ট্রাইকার জো গার্নারকে নেওয়ার। উইগান বর্তমানে ইংল্যান্ডের লিগ ওয়ানে খেলে। গার্নারকে তাঁর ক্লাব রিলিজ করে দিয়েছে। কিন্তু আগামি জানু্য়ারির নতুন উইন্ডো না খুললে গার্নারকে লাল হলুদ জার্সি পরিয়ে মাঠে নামানো মুশকিল। তবে সই সাবুদ মিটে গেলে গার্নারের ডিসেম্বরের মধ্যেই গোয়ায় এসে চোদ্দ দিনের নিভৃতাবাস কাটিয়ে প্র্যাক্টিসে নেমে পড়ার কথা।
তবে সে সব এখন অনেক দূরের বিষয়।। আপাতত ইস্ট বেঙ্গলকে পেরোতে হবে মুম্বই সিটি এফ সি-কে। মুম্বই মাঝারি মানের দল। গত ছয় বারে কখনও চ্যাম্পিয়ন হয়নি। এবারও তারা দুটো ম্যাচ খেলেছে। প্রথম ম্যাচে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ০-১ গোলে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে এফ সি গোয়াকে হারিয়ে দিয়েছে একই ব্যবধানে। ইস্ট বেঙ্গল যদি ভাল করে টিম গড়ে পর্যাপ্ত প্র্যাক্টিস করে মুম্বইয়ের মুখোমুখি হত তাহলে বলা যেত যে ইস্ট বেঙ্গল মঙ্গলবারের ম্যাচে ফেভারিট। কিন্তু সে রকম কিছু বলা মুশকিল। ইস্ট বেঙ্গলের ভারতীয় ফুটবলারদের নাম যতই সার্কিটে লোকে জানুক না কেন, তারা এই মুহূর্তে অতীতের ছায়া। রানা ঘরামি, নারায়ণ দাস, সুরচন্দ্র সিং, লোকেন মিতাই, মহম্মদ রফিক, অভিষেক আম্বেকরদের এখনও আই এস এল-এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। ইস্ট বেঙ্গলের ভরসা তাই বিদেশিরা।
মোহনবাগান ম্যাচে যে পাঁচজন বিদেশি খেলেছেন তাদের মধ্যে অ্যান্টনি পিলকিংটন এবং মাট্টি স্টেইনম্যান ছাড়া বাকিদের খুব বেশি নম্বর দেওয়া যাবে না। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলে পিলকিংটন শুরুতেই একটা গোল করে ফেলতে পারতেন। তবে তাঁর পারফরম্যান্স ভালই বলা যায়। একই কথা বলা যেতে পারে জার্মান মিডফিল্ডার মাট্টি স্টেইনম্যান সম্পর্কেও। তবে অধিনায়ক ড্যানি ফক্স এবং রাইট ব্যাক স্কট নেভিলের কাছ থেকে আরও ভাল খেলা প্রত্যাশা করা যেতেই পারে। বিশেষ করে স্কট নেভিল, যাঁকে অস্ট্রেলিয়ার এ লিগে জার্মান রাইট ব্যাক ফিলিপ লামের সঙ্গে তুলনা করা হয়। মোহনবাগান ম্যাচে নেভিলের কাছ থেকে তেমন ওভারল্যাপিং পাওয়া যায়নি। অধিনায়ক ড্যানি ফক্স ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সফল ডিফেন্ডার। তাঁর কাছ থেকেও ডিফেন্সে হারও ভাল খেলা আশা করা যায়। বাকি রইলেন পঞ্চম বিদেশি কঙ্গোর জাক মাঘোমা। এই মিডফিল্ডার কিন্তু তাঁর উপরে রাখা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। তবে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। প্রত্যেকেরই প্রথম ম্যাচ। মাঠে নেমেই যে সবাই দুর্দান্ত খেলবেন এ রকম ভাবা ঠিক নয়। আশা করা যেতে পারে ধীরে ধীরে তাঁরা টিমের সঙ্গে মানিয়ে নেবেন।
মুম্বই টিমের স্বদেশি ফুটবলাররা জাতীয় ফুটবল মানচিত্রে পরিচিত নাম। বেশিরভাগই এখনকার জাতীয় দলের ফুটবলার। মন্দার রাও দেশাই, সার্থক গোলুই, রাওলিন বর্জেস, থনদম্বা সিং, রেইনার ফার্নান্ডেজরা নিকট অতীতে দেশের জার্সি পরে খেলেছেন। ইস্ট বেঙ্গলের স্বদেশি ব্রিগেডের চেয়ে ওরা অনেক ভাল। মুম্বইয়ের বিদেশিরা তেমন আহামরি কিছু নয়। অন্তত প্রথম দুটি ম্যাচে তাদেরকে সেভাবে নজর কাড়তে দেখা যায়নি।
এর পরেও কিছু কথা থাকে। তা হল ইস্ট বেঙ্গলের কোচ রবি ফাউলার। বিশ্ব ফুটবলে এক পরিচিত নাম ফাউলার প্রথম ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে হারলেও তাঁর টিমের প্রশংসা করেছেন সবাই। বিশেষ করে বল পসেসনে তিনি টেক্কা দিয়ে গেছেন মোহনবাগানকে। কিন্তু ডিফেন্সের মুহূর্তের দোষে দুটো গোল হজম করতে হয়েছে তাঁকে। তবে ম্যারাথন লিগে একটা ম্যাচ হেরে যাওয়া খুব বড় কিছু নয়। বরং দেখার সেই হারের ভুলগুলো শুধরে পরের ম্যাচে জেতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া। ফাউলারের টিম মঙ্গলবার সেটা পারে কি না তাই এখন দেখার।