Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
বিতর্কের কেন্দ্রে ইস্ট বেঙ্গল কোচ রবি ফাউলার।--ফাইল চিত্র।
আই এস এল সবে শুরু হয়েছে। এগারোটি দলের মধ্যে বেশিরভাগই দুটো বা তিনটে করে ম্যাচ খেলেছে। তিন ম্যাচে নয় পয়েন্ট পেয়ে এটিকে মোহনবাগান সবার আগে। আবার বেঙ্গালুরু এফ সি দুটো ম্যাচের একটাতেও জেতেনি। দুটোই ড্র করেছে তারা। এই যখন অবস্থা তখন ইস্ট বেঙ্গল দুটো ম্যাচ খেলার পরেই অনন্ত সমস্যায় পড়ে গেছে। দুটো ম্যাচে পাঁচ গোল খেয়েছে তারা। এবং দুটোতেই হেরেছে। তার উপর তাদের দুই বিদেশি প্লেয়ারের চোট। যার জন্য অধিনায়ক ড্যানিয়েল ফক্স মুম্বই এফ সি ম্যাচের সাত মিনিটে বসে যান। ষষ্ঠ বিদেশি অ্যারন আমাদি হলওয়ে প্র্যাক্টিসের সময় গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন। এখনও খেলার মতো ফিট হননি। তাই মুম্বই ম্যাচে ফক্স বসে যাওয়ার পর বাকি সময়টা চার বিদেশিতে খেলতে হয়েছে ইস্ট বেঙ্গলকে।
শুধু তাই নয়, মুম্বই ম্যাচের পর লাল হলুদ কোচ রবি ফাউলার তাঁর ভারতীয় ফুটবলারদের সমালোচনা করে বলেছেন, “ওদের খেলা দেখে মনে হচ্ছে ওরা কখনও কোচিং নেয়নি কারুর কাছ থেকে।“ কোচের এরকম সমালোচনায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একাধিক প্রাক্তন কোচ সমালোচনা করেছেন ফাউলারের। তবে ফাউলার প্রকাশ্যে নিজের ফুটবলারদের সমালোচনা করে ঠিক করেছেন কি না তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু এটাও ঠিক ফাউলারের ভারতীয়দের পারফরম্যান্স খুবই খারাপ। এবং এর জন্য ফাউলারকে দোষ দেওয়া যায় না। এই ফুটবলারদের তিনি পছন্দ করে আনেননি। তাদের পছন্দ করেছেন সাবেক লাল হলুদ কর্তারা। যে ফুটবলারদের তারা নিয়েছিলেন তাদের অতীত ভাল থাকলেও বর্তমান খুব খারাপ। ইস্ট বেঙ্গল যখন এই ফুটবলারদের নিয়েছিল তখন তারা আই এস এল খেলবে কি না তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। আর বাকি টিমের বেশির ভাগ প্লেয়ারদের সঙ্গে দুই থেকে তিন বছরের চুক্তি ছিল। ভাল প্লেয়ার তাই খুঁজে পায়নি ইস্ট বেঙ্গল। ঝড়তি পড়তি প্লেয়ার নিয়ে কোনও রকমে দল সাজিয়েছে তারা। তবে দেবজিৎ মজুমদার, অভিষেক আম্বেকর, নারায়ণ দাস, মহম্মদ ইর্শাদ, গুরতেজ সিং, রানা ঘরামি, শেহনাজ সিং, ইউজেনসন লিংডো, বিকাশ জাইরু, মহম্মদ রফিক, বলবন্ত সিং, জেজে—সবাইকেই চেনে ভারতীয় ফুটবল। তাদের দলে নেওয়ায় কোনও অন্যায়ও নেই। কিন্তু দীর্ঘ দিন ম্যাচের বাইরে থাকা এবং ইস্ট বেঙ্গলের প্র্যাক্টিসটা কম হওয়ায় ভারতীয় ফুটবলাররা এখনও নিজেদের সেরা খেলা থেকে অনেক দূরে।
এই অবস্থায় ইস্ট বেঙ্গলের রক্ষাকর্তা হতে পারতেন তাদের বিদেশি ফুটবলাররা। কিন্তু স্কট নেভিল, মাট্টি স্টেইনম্যান, জাক মাঘোমা কিংবা অ্যান্টিনি পিলকিংটনরা এখনও সেই ফুটবল খেলতে পারেননি যা দিয়ে ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচ জিততে পারে। আর জেতা তো দূরের কথা, ইস্ট বেঙ্গল এখনও গোলের মুখই দেখেনি, ম্যাচ জিততে গেলে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার। এই প্রেক্ষিতে ইস্ট বেঙ্গল শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের। এই টিমটা এ বছর খুব খারাপ খেলছে না। তাদের কোচ জেরার্ড নাস কাসানোভা এবারের আই পি এল-এর সর্ব কণিষ্ঠ কোচ। তাঁর বয়স মাত্র ৩৫। কাসানোভার টিম তিনটে ম্যাচ খেলেছে। তারা মুম্বই এফ সি-কে ১-০ গোলে হারালেও ২-২ করেছে কেরালা ব্লাস্টার্সের সঙ্গে। আর ১-১ করেছে গোয়া এফ সি-র সঙ্গে। তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট। দলে আছেন কোয়েসি আপিয়া এবং ইদিসা সাইলার মতো পজিটিভ স্ট্রাইকার। ইস্ট বেঙ্গলে তো কোনও পজিটিভ স্ট্রাইকারই নেই। পিলকিংটন, মাঘোমা এবং বলবন্তের কম্বিনেশনে প্রচুর ফাঁক। মাঝ মাঠ থেকেও তেমন সাপোর্ট নেই। তাই নর্থ ইস্ট-এর কাছ থেকে ইস্ট বেঙ্গল যদি একটা পয়েন্টও আনতে পারে সেটাই অনেক। এখন তারা সেটা পারবে কি না তাই এখন দেখার।