Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনাকে যে হাল্কাভাবে নেওয়া হচ্ছে না, গতকাল রাতেই তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ শুক্রবার সকালে রাজ্যপালের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিকে ডেকে পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ১৪ ডিসেম্বর তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের তরফে রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, দু’দিনের রাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার ডায়মন্ডহারবার যাচ্ছিলেন বিজেপির সর্রভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। অভিযোগ ওঠে সেই সময় তৃণমূলের তরফে শিরাকোলে তাঁর কনভয়ের ওপর হামলা চালানো হয়। যদিও বুলেটপ্রুফ গাড়ি হওয়ার কারণে জেপি নাড্ডার কোনও আঘাত লাগেনি। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায় আহত হন। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই হামলার মধ্য দিয়ে।
রাতেই ঘটনার নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, 'বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা করছি। এই হামলার মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকারের বেপরোয়া মনোভাব এবং রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চিত্র ফুটে ওঠে। বিজেপি সভাপতির সঙ্গে যদি এইভাবে আচরণ করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে সেটা বোঝা যায়।' বিজেপি সভাপতির ওপর হামলার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে আজ শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি।
এদিকে, এই ঘটনার পরেই রাজ্য প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্তা মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রর থেকে রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সন্ধ্যায় রাজভবনে পৌঁছন নবান্নের দুই শীর্ষ আমলা। যদিও বৈঠক শেষে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্যপাল ট্যুইট করে জানান, হামলার ঘটনা নিয়ে বিশদে কোনও ব্যাখা দিতে পারেননি দুই আধিকারিক। শুক্রবার সকালে জেপি নাড্ডার ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠান রাজ্যপাল। তারপরেই রাজ্য প্রশাসনের দুই শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের জবাব চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
অপরদিকে, এদিন দুপুর ১২টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপাল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ দুর্ভাগ্যজনক”। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে আগুন নিয়ে না খেলার জন্য সতর্ক করে দেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান থেকে সরে আসতে পারেন না বলেও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। জেপি নাড্ডার ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘গতকালকের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আগুন নিয়ে খেলা উচিৎ নয় মুখ্যমন্ত্রীর।’ আইনশৃঙ্খলার শাসনকে হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিৎ নয় বলেও এদিন মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীরও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা আছে। ওঁকে সংবিধান মেনে চলতেই হবে। আমি সতর্ক করা সত্ত্বেও রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। মানবাধিকার দিবসেই কী হল রাজ্যে! যা ঘটল তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।’ গতকালকের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘একজন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কী করে এমন ভাষা প্রয়োগ করেন। উনি ক্ষমা চাইলে, ওঁরই সম্মান বাড়বে।’ এদিন রাজ্যপাল বলেন, ‘ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের আচরণ সংবিধানের পক্ষে অবমাননাকর। ডায়মন্ডহারবারের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে। আমার সাংবিধানিক দায়িত্বকে আমি লঘু করতে পারব না। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করছি।’ এমনকি রাজ্যপাল এও বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব শেষ হলে সেখান থেকে শুরু হবে আমার দায়িত্ব।’
রাজ্যপাল বলেন, ‘ভারতীয়দেরই বহিরাগত বলছেন? এই দেশে এক নাগরিকত্ব বজায় রয়েছে। দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। ভারত এক দেশ, সব নাগরিক সমান। আপনি সংবিধান থেকে সরলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে। মুখ্যসচিব-ডিজিপিকে যোগাযোগ করে বলেছি এমন ঘটনা ঠিক নয়। গতকাল সকাল ৯টা ০৫-এ মুখ্যসচিব-ডিজিপিকে সাবধান করেছিলাম। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কথায় সতর্ক হলে এমন ঘটে না।’
রাজ্যপাল বলেন, ‘রাজ্যের চারদিকে দুর্নীতি, বিরোধীরা প্রতিবাদের জায়গাই পাচ্ছেন না। বিরোধীদের সব কার্যকলাপ নৃশংসভাবে দমন করা হচ্ছে।’
Thanks a lot! Helpful information. Best Essay writing buy essay online reviews