Written By দেবাশিস সেনগুপ্ত
শেষ ধাপে মহাকরণ সংস্কারের প্রথম পর্যায়ের কাজ। চলতি বছরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচন পর্ব মিটলেই সচিবালয় ফিরতে পারে রাইটার্সে। ২০২১ সালে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে শহর কলকাতার এক অন্যতম ঐতিহ্য রাইটার্স বিল্ডিং।২০১৩ সাল পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর ছিল এই মহাকরণ(রাইটার্স বিল্ডিং) । সাত বছর ধরে সংস্কারের কাজ চলছিল এই মহাকরণের।অবশেষে সংস্কারের কাজ চলার পর নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে রাজ্যের পুরনো এই সচিবালয় মহাকরণের। সূত্রের খবর, বহু ইতিহাসের সাক্ষী, মহাকরণের ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে, ব্লক ওয়ান, ব্লক টু এবং মেন ব্লকের একাংশ সংস্কার করা হয়েছে। ব্লক ওয়ানে যে সব ঘর আছে, হেরিটেজ মর্যাদার কথা মাথায় রেখে তার মূল কাঠামো একই রাখা হয়েছে। সেখানে দরজার মাপ ও ঘরের দৈর্ঘ্য বেড়েছে। বিদ্যুত সংযোগ ঢেলে সাজানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে আরও খবর, মহাকরণ সংস্কারে মোট ১৫০ কোটি টাকা খরচ ধার্য করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। মেঝে তৈরি আর অল্পস্বল্প রূপটানের কাজ শেষ হলেই ফের একবার ব্যবহারের উপযুক্ত হয়ে উঠবে রাইটার্স বিল্ডিং এর একটা অংশ। সেক্ষেত্রে বিধানসভা ভোটের পর ফের সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট অংশে থাকা দফতরগুলো মহাকরণে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছে প্রাশাসনিক কর্তারা। ২০১৩ সালের ৭ আগস্ট রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর মহাকরণ থেকে নবান্নে স্থানান্তরিত করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তারপরেই শুরু হয় প্রথম পর্যায়ের সংস্কারের প্রক্রিয়া। মহাকরণ সংস্কারের ঘোষণার পর রাজ্য সরকার প্রথমেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে। হেরিটেজ কমিশন এবং বিদেশের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাওয়া হয়।ঐতিহ্য অটুট রেখে সংস্কার কী ভাবে হবে - সে ব্যাপারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদেরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তৈরি হয় উচ্চপর্যায়ের কমিটি। এরপর ৭ বছর ধরে চলেছে প্রথম পর্যায়ের সংস্কারের কাজ। এখন যা প্রায় শেষের পথে। মধ্য কলকাতার এই লালবাড়ি থেকেই ব্রিটিশরা একসময় দেশ শাসন করেছে।তারপর আটজন মুখ্যমন্ত্রী এই ভবন থেকেই রাজ্য শাসন করেছেন।
ইতিহাস বলছে ১৭৭৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্লার্ক বা রাইটারদের থাকার জন্য লালদিঘির পাড়ে তৈরি হয় এই ভবন। নাম দেওয়া হয় রাইটার্স বিল্ডিং। নির্মাণকাজ চলেছিল ১৭৭৭ থেকে ১৭৮০ সাল পর্যন্ত। পরে ধাপে ধাপে ১৮২১, ১৮৮৯ এবং ১৯০৬ সালে এর সম্প্রসারণ করা হয়। স্বাধীনতার পর থেকে রাজ্য সরকারের সদর দফতর ছিল এই ভবন। ২০১৩ সালে তা স্থানান্তরিত হয় গঙ্গার ওপাড়ে নবান্নে। তখন থেকেই মহাকরণে শুরু হয় সংস্কারের কাজ। বহু যুগ পরিবর্তনের নীরব স্বাক্ষী রাইটার্স বিল্ডিং হৃত গৌরব ফিরে পেতে প্রস্তুত দেখে খুশি এখানকার দীর্ঘ দিনের কর্মীরাও। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, কাঠামো সংস্কার হলেও, এখনও বেশ কিছু কাজ বাকি। রাজ্যের পূর্ত দফতরের কর্তাদের আশা দ্রুত শেষ করা যাবে এই পর্যায়ের বাকি থাকা কাজ। যদিও বাইরের দিকের সৌন্দার্যয়নের কাজ সহ সংস্কারের কাজগুলি দ্বিতীয় পর্যায়ে হবে বলেও যানা যাচ্ছে প্রশাসনিক সূত্রে।