Written By স্বরূপ গঙ্গোপাধ্যায়
রাঢ় বাংলার প্রাচীন লোকসংস্কৃতির ধারা আজও টিকে রয়েছে লালমাটির বাঁকুড়ায়। টুসু গান আর পিঠে পুলির সঙ্গে রাঢ় বাংলার আম জনতা আজও প্রাচীন পৌষ পার্বনের উৎসবে মেতে ওঠেন। সারা পৌষ মাস ধরেই শীতের সন্ধ্যেয় অনেক পল্লীগ্রামে কান পাতলেই শোনা যায় টুসু গানের মেঠো সুর। একদিকে টুসু গান আর অন্যদিকে পিঠেপুলির প্রস্তুতি, সব মিলিয়ে বাঙালির পৌষপার্বন জমজমাট। পৌষের ঠাণ্ডা আমেজ নিয়ে সারা পৌষ মাস ধরে চলে টুসু গানের আসর ও টুসু বন্দনা। পোড়া মাটির বিশেষ খোলা ধানের তুষ ভরে তাতে মুলত গাঁদা ফুল ও অন্যান্য ফুল দিয়ে সাজিয়ে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে ঘিরে বসে গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় টুসু আরাধনা। পৌষের প্রথমদিন থেকেই পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত একমাস জুড়ে প্রতিদিন সন্ধ্যে বেলায় চলে টুসুর গান। চলে নানান লোকাচার। টুসুকে প্রসাদ হিসাবে নিবেদন করা হয় মুড়ি, মুলো, ছোলা, মিষ্টি বাতাসা ইত্যাদি । আধুনিক জীবনে টুসু গানে কিছুটা ভাটা পড়েছে তবে হারিয়ে যায়নি রাঢ় বাংলার প্রাচীন এই লোক সংস্কৃতি। টুসু গানের মেঠো সুরে ফুটে ওঠে সামাজিক, পৌরাণিক, রাজনৈতিক, সুখ দুঃখ, আনন্দ বেদনার, প্রেম প্রীতি ভালবাসার নানান কথা ও কাহিনি। রাত জেগে টুসু গানে মশগুল টুসু শিল্পীরা সারাদিন পিঠে তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। ঢেঁকিতে পা দিয়ে চালের গুঁড়ি বানিয়ে তারপর বানানো হয় পিঠে।