Written By টুটুন দাস
একসময় কলকাতার বুকে বাবু সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ ছিল বুলবুল পাখির লড়াই। কিন্তু কালের নিয়মে বাবুরা হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পাখির লড়াই হারিয়ে যায়। তবে এই রাজ্যের ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানা এলাকায় পৌষ সংক্রান্তির দুপুরে গেলে আজও দেখা যায় এই পাখির লড়াই। তবে এই পাখির লড়াই আর বাবুসংস্কৃতির অঙ্গ নয়, লোকসংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গেছে। প্রত্যন্ত গ্রাম গোপীবল্লভপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের পাশেই চাঁদোয়া টাঙিয়ে হয় লড়াই। যারা অংশগ্রহণ করেন তাঁদের অধিকাংশই খেটে খাওয়া কৃষিজীবী মানুষ। এই পাখির লড়াই তাঁদের জীবনের এক অঙ্গ। গোপীবল্লভপুরের এই লড়াইয়ের আসরের পাশাপাশি গ্রামের উৎসাহী লোকজন বুলবুল পাখি নিয়ে লড়াই করতে আসেন। কিন্তু আসল লড়াই হয় দক্ষিণ পাড়া আর বাজারপাড়ার মধ্যে। লড়াইয়ের আসরে নামানোর আগে লড়াইয়ে উৎসাহী ব্যক্তি বা স্থানীয় ভাষায় হাউসিদের বাড়িতে পাখি গুলিকে রেখে দীর্ঘদিন ধরে চলে প্রশিক্ষণ। এক হাউসি জানিয়েছেন, "অভুক্ত পাখিদের রাগ বাড়াতে দেওয়া হয় আখের রস পাকা কলা ইত্যাদি। খাঁচায় রেখে বা হাতের আঙ্গুলে বসিয়ে চলে মানুষের সান্নিধ্যে থাকার প্রশিক্ষণ। পাখি লড়াইয়ের নকল মহড়াও হয়। তবে এই লড়াই মোরগ লড়াইয়ের মত নয়। রক্তপাতহীন পাখির লড়াই।"