Written By স্বরূপ গঙ্গোপাধ্যায়
মকর সংক্রান্তির সকাল থেকে প্রাচীন রীতি মেনে বিষ্ণুপুরে টুসু ভাসানের ঢল। নাচে গানে মাতোয়ারা প্রাচীন মল্ল গড়। মকর সংক্রান্তিতে রেওয়াজ মেনে সকাল থেকে প্রাচীন মল্লগড় বিষ্ণুপুরে শুরু হল টুসু ভাসান। বিভিন্ন জায়গা থেকে টুসুর চৌদল সাজিয়ে আট থেকে আশি বিভিন্ন বয়সের মহিলারা নাচে গানে মাতোয়ারা হয়ে পৌঁছলেন বিষ্ণুপুরের যমুনা বাঁধের পাড়ে। রাতভর টুসু গানের পর মকর সংক্রান্তির সকাল থেকে লোকায়ত গানের সুরে তাল মিলিয়ে একে একে যমুনা বাঁধের জলে নেমে চোখের জলে বিদায় জানাল ঘরের মেয়েকে টুসুকে। মকর সংক্রান্তির সঙ্গে যদি সাগর স্নান প্রায় সমার্থক হয়ে থাকে তাহলে এই দিনটির সঙ্গে রাঢ় বাংলা একেবারেই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে টুসু ভাসান উৎসব। বর্তমান নিউ নর্মালে এতটুকুও ছেদ পড়ল না রাঢ় বাংলার মাটিতে শত শত বছর ধরে চলে আসা প্রাচীন সেই লোকায়ত ধারার। প্রাচীন রীতি মেনে ফি বছর পৌষ মাসের শুরুতেই রাঢ় বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় টুসুর আরাধনা। সারা পৌষ মাস জুড়ে প্রতি সন্ধ্যায় পরিবারের মহিলাদের কোরাসে মাটির গন্ধ মাখা গানে মুখরিত হয় গ্রাম গঞ্জের বাতাস। টানা একমাস ধরে একেবারে লোকায়ত ঘরানায় টুসু আরাধনার পর মকর সংক্রান্তিতে বিদায় জানাতে হয় ঘরের মেয়ে টুসুকে। তার আগের রাতে হয় জাগরণ। প্রাচীন সেই রেওয়াজ আজও এগিয়ে চলেছে তার নিজস্ব ধারায়। একমাস ধরে টুসু বন্দনার পর পৌষের সংক্রান্তিতে যমুনা বাঁধের জলে টুসু ভাসিয়ে সকলেই কামনা জানাল ‘আবার এসো মা’।