Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
ইস্ট বেঙ্গলের এক নম্বর ভরসা ব্রাইট এনোবাখরে।--ফাইল ছবি।
আই এস এল-এর প্রথম লিগের শেষ দিকে বেশ ভাল খেলে দশ ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে এস সি ইস্ট বেঙ্গল শুক্রবার শুরু করতে চলেছে ফিরতি লিগের খেলা। প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কেরালা ব্লাস্টার্স, যাদের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গল ১-১ ড্র করেছিল। তারপর থেকে গোয়ার মাণ্ডবী নদী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। পর পর হারতে হারতে জেরবার ইস্ট বেঙ্গল অবশেষে খুঁজে পেয়েছে জয়ের রাস্তা। গত পাঁচ ম্যাচে তারা অপরাজিত। পয়েন্ট টেবলে এখন নয় নম্বরে। শুক্রবার তাদের সামনে কেরালাকে হারাবার হাতছানি।
ইস্ট বেঙ্গলের এই নিজেদের ফিরে পাওয়ার পিছনে একজনই। তিনি হলেন নাইজিরিয়ান ফুটবলার ব্রাইট এনোবাখারে। দুটি পুরো ম্যাচ এবং একটি ম্যাচে আঠারো মিনিট খেলেছেন ব্রাইট। এবং তার মধ্যেই তিনি লাল হলুদের হিরো। গোল করেছেন দুটি। তার মধ্যে প্রথম গোলটি এবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা। চারজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তাঁর গোলটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল। স্ট্রাইকার হিসেবে ব্রাইটের আবির্ভাব হলেও তাঁকে লাল হলুদ কোচ রবি ফাউলার খেলাচ্ছেন মাঝ মাঠে। একটু পিছন থেকে খেলেই ব্রাইট সাফল্য পাচ্ছেন। তাঁর পা থেকে বল কাড়া মুশকিল। এবং বল নিয়ে তিরিশ-চল্লিশ গজ অতিক্রম করতে পারেন অনায়াসেই। তাঁর জন্যই ইস্ট বেঙ্গলকে সমীহ করতে হচ্ছে বিপক্ষদের।
ব্রাইটের সঙ্গে বাকি বিদেশিরাও এখন অনেকটা মানিয়ে নিয়েছেন। দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার স্কট নেভিল এবং ড্যানিয়েল ফক্স, মাঝ মাঠে মাট্টি স্টেইনম্যান এবং ব্রাইট, এবং দুই উইঙ্গার অ্যান্টনি পিলকিংটন এবং জাক মাঘোমাকে নিয়ে ইস্ট বেঙ্গলের বিদেশি শক্তি বেশ ভাল। কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিদেশি নামানো যায় না। তাই শুক্রবার চোট সারিয়ে ফিরে আসা অ্যান্টনি পিলকিংটনকে জায়গা ছেড়ে দিতে শুরু থেকে হয়তো জাক মাঘোমাকে মাঠে দেখা যাবে না।
স্বদেশিদের মধ্যে সেরা গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। এই গোলকিপার যে প্রতি ম্যাচে কত গোল বাঁচাচ্ছেন তার ইয়ত্তা নেই। তাঁর সঙ্গে রাইট ব্যাক সূর্য কুমার যাদব, লেফট ব্যাক নারায়ণ দাস, মাঝ মাঠে অঙ্কিত মুখার্জিরা চমৎকার খেলছেন। এদের সঙ্গে যদি মিডফিল্ডার মিলন সিং এবং স্ট্রাইকার হরমনপ্রীত আরও একটু মানিয়ে নিতে পারতেন তবে আরও ধারাল হতো ইস্ট বেঙ্গল। তবে মিডফিল্ডার লোকেন মিতাই ফিট হয়ে গেছেন। সাইড লাইনে অপেক্ষা করছেন মহম্মদ রফিক এবং বিকাশ জাইরুরা। তাই ইস্ট বেঙ্গলের টিম গড়ার জন্য প্রচুর উপাদান আছে রবি ফাউলারের হাতে।
এদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত ইস্ট বেঙ্গল জিততে পারবে কি না তা ভবিষ্যতের কথা। কিন্তু তারা এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবেই শুরু করবে। কিবু ভিকুনার কেরালা ব্লাস্টার্স আছে দশ নম্বরে। ইস্ট বেঙ্গলের থেকে একটু নীচে। তবে তাদের শক্তিকে উপেক্ষা করা যাবে না। বিশেষ করে তাদের অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইকার জর্ডন মারে, যিনি ইতিমধ্যেই পাঁচটি গোল করে ফেলেছেন। গত ম্যাচে দশ জনে খেলে কেরালা যে জামশেদপুরকে হারিয়েছে তার পিছনে ওই জর্ডনই। তাঁকে আটকানোর জন্য ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্সকে নিশ্চয়ই ভাবনা চিন্তা করতে হবে। তবে আগের ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্সের যে ভগ্নদশা ছিল তার চেয়ে এখন তারা অনেকটাই ভাল। এই ইস্ট বেঙ্গলের ক্ষমতা আছে কেরালার ফরোয়ার্ডদের আটকানোর। এখন মাঠে তারা সেটা কতটা করে দেখাতে পারবে তার উপরেই নির্ভর করবে লাল হলুদের পয়েন্ট টেবলের উপরে ওঠা।