Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
গোলের পর উল্লাস ডেভিড উইলিয়ামসের। বৃহস্পতিবার গোয়ায়।
এটিকে মোহনবাগান—১ চেন্নাইয়ান এফ সি—০
(ডেভিড উইলিয়ামস)
যে টিম ইস্ট বেঙ্গলকে ষাট মিনিট দশ জনে পেয়েও গোল করতে পারে না তাদের বিরুদ্ধে গোল করতে মোহনবাগানের লাগল ৯০ মিনিট। তাও গোল হওয়ার পর প্রায় গোল খেয়ে যাচ্ছিল মোহনবাগান। গোল লাইন থেকে তিরি ব্যাক ভলি করে গোলটা বাঁচান। তবে চেন্নাইয়ানকে হারিয়ে পয়েন্টের বিচারে মোহনবাগান প্রায় মুম্বই সিটির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার মতো জায়গায় নিয়ে গেল নিজেদের। বারো ম্যাচে তাদের পয়েন্ট এখন ২৪। থেকে গেল দু নম্বরেই। এক ম্যাচ কম খেলে মুম্বই আছে ২৬ পয়েন্টে।
শুধু তিন বারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই নয়, মোহনবাগানের এবারের খেলার মধ্যে একটা আলাদা ব্যাপার আছে। হাবাসকে যতই রক্ষণাত্মক কোচ বলা হোক না কেন, তাঁর দর্শন খুব পরিষ্কার। আগে বিপক্ষের শক্তিটা বুঝে নাও, তারপর আক্রমণে ঝাঁপাও। বৃহস্পতিবার যেমন ফাতোরদার নেহরু স্টেডিয়ামে মোহনবাগান বিপক্ষকে মাপতে সময় নিল বড়জোর মিনিট পনেরো। এই সময় চেন্নাই যারা প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন, কিছু নিষ্ফলা আক্রমণ শানাল বটে, কিন্তু বাগান ডিফেন্সের ব্যাক ফোরকে ঝামেলায় ফেলার জন্য সেগুলো যথেষ্ট ছিল না। এবং ওই মিনিট পনেরোর ঝটকা সামলে নিয়ে মোহনবাগান সেই যে ম্যাচটা ধরে নিল সেটা বহাল থাকল শেষ পর্যন্ত। গোলের সুযোগ যদিও তেমন আসেনি। প্রথমার্দ্ধে জাভি হার্নান্ডেজের একটা দুরন্ত শট বাঁচিয়ে দিলেন চেন্নাই গোলকিপার কথ। আর মনবীর সুবিধেজনক জায়গায় নিজেকে নিয়ে গিয়েও মাইনাসটা যদি ঠিক মতো রাখতে পারতেন তাহলে রয় কৃষ্ণ গোলটা হয়তো পেয়েও যেতেন। তাই বল পসেসনে অনেক এগিয়ে থেকেও, প্রচুর পাস খেলেও মোহনবাগান জিতল শেষ মিনিটের গোলে।
এদিনও গোল পেলেন না কৃষ্ণ। আসলে তিনি বক্স স্ট্রাইকার। বক্সের মধ্যে অনেক কারিকুরি আছে তাঁর পায়ে। কিন্তু গোল তৈরি করে নেওয়ার ক্ষমতা নেই যেটা ইগর আঙ্গুলো কিংবা আ্যাডাম লে ফন্দ্রে-র আছে। এমন কি আই এস এল-এ নবাগত ব্রাইট এনোবাখারেরও আছে। সেটা স্বল্প পরিসরে ব্রাইট বুঝিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু কৃষ্ণর গোল না পাওয়া চিন্তায় ফেলতে বাধ্য হাবাসকে। এখন পয়েন্টের যা অবস্থা তাতে মোহনবাগান প্লে অফ-এ যাচ্ছেই। কিন্তু শেষ দুটো ম্যাচে যখন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, তখন কিন্তু কৃষ্ণের কাছ থেকে গোল চাইতেই হবে বাগানকে। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে সেই কৃষ্ণকে পাওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বাগানের বিদেশিরা অবশ্য ভাল ফর্মেই আছেন। বিশেষ করে তিরি। এই ডিফেন্ডার বাগান ডিফেন্সকে এমন নির্ভরতা দিচ্ছেন যে সন্দেশ ঝিঙ্গনের ছোটখাটো ভুল ত্রূটি কোনও বিপদ ডেকে আনছে না। তবে কার্ল ম্যাকহিউ এখন দলের বোঝা। তাঁকে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছেন হাবাস। এডু গার্সিয়াকে শেট পিস ছাড়া চোখে পড়ছে না। বরং ভাল খেললেন আই লিগ থেকে আই এস এল-এ উন্নীত শেখ সাহিল। এই বেবি অফ দ্য টিম কিন্তু ক্রমশ দাদাদের ভিড়ে নিজের জাত চেনাচ্ছেন। জাভি হার্নন্ডেজের কর্নারেই নব্বই মিনিটে সুযোগ সন্ধানী গোল করে পরিবর্ত ডেভিড উইলিয়ামস তিন পয়েন্ট আনলেও ডেভিড কিন্তু নিজের স্ট্রাইকিং এবিলিটি থেকে অনেক দূরে। তবে আজ তিনিই নায়ক। এক পয়েন্টকে তিন পয়েন্ট করল তাঁর হেড। সঙ্গত কারণেই তিনিই ম্যাচের সেরা।