Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
২০২১ সালের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে রীতিমতো চিন্তিত তা প্রতিমুহূর্তেই তাদের প্রত্যেকটা পদক্ষেপেই বোঝা যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন তাতে বিগত দিনে রাজ্যে লোকসভা বিধানসভা নির্বাচনে কোনদিন নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি তিন দিনের সফরে রাজ্যে এসে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ ঘুরে দিল্লি চলে যাবার পর সেখানে রিভিউ মিটিং করে নির্বাচন কমিশন। সেই রিভিউ মিটিং থেকে একের পর এক তথ্য সামনে আসছে যা রীতিমতো সব রাজনৈতিক দলগুলোকেই নতুন সমীকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসেছিল ৭৪৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। আর এবার সেই সংখ্যাটাই ১০০০ কোম্পানিতে পরিণত হতে চলেছে এমনটাই খবর নির্বাচন কমিশন সূত্রে। বিগত দিনের নির্বাচনগুলিতে রাজ্যে যে পরিমাণে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে ভোটের দিন এবং ভোটকে কেন্দ্র করে সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার এবার নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের জন্য ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করতে। আর সেখান থেকেই নির্বাচন কমিশন আগে থাকতেই নিজেদের গুটি সাজাতে আরম্ভ করে দিয়েছে। যদিও বলে রাখা ভালো করোনা পরিস্থিতিতে ভোট করানোর জন্য এরই মধ্যে মূল বুথের সংখ্যা ৭৮,৯০৩টি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে এই বুথ গুলিতে ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার কারণে একই প্রেমিসেসে তৈরি করা হবে অক্সিলারি বুথ। যার ফলে একদিকে ভোটারের সংখ্যা কমবে অন্যদিকে কোভিড প্রটোকল মেনে তাড়াতাড়ি কাজ করা যাবে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই বুথের সংখ্যা বেড়ে তাই বর্তমানে বুথের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১৭৯০টি। ফলে এই ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যাটাও যে বাড়বে সেটা বলার যেমন অপেক্ষা রাখে না অন্যদিকে অনেক আগে থাকতেই এবার রাজ্যে এসে পৌঁছবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মানুষের মধ্যে মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে এতদিন রাজ্য পুলিশ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করা থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাজ্য পুলিশ, কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশন একটি সমন্বয় তৈরি করে কাজ করবে। যার ফলে বিরোধীদের তোলা যে সব অভিযোগ সেই অভিযোগকে এবার নির্বাচন কমিশন যে ১০০% মান্যতা দিচ্ছে তা অন্তত এই সিদ্ধান্ত থেকেই পরিষ্কার। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭৪৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াতে পারে ১০০০কোম্পানিতে। ফলে সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা করতে আর কোনো অসুবিধা থাকবে না বলেই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ করা যেতে পারে নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ রাজ্যে আসার আগে রাজ্যের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন দুবার এসে বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করে জানিয়েছিলেন এবার কেবলমাত্র বিহারের নির্বাচনকেই রোল মডেল করবেন না তারা। এই বছরের বিধানসভা নির্বাচন সারাদেশের কাছে একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। মানুষকে স্বাভাবিকভাবে এবং সুস্থ ভাবে ভোট দানে রাখতে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বাচন পরিচালনা অন্যদিকে সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাই এখন নির্বাচন কমিশনের কাছে সবথেকে বড় লক্ষ্য। আর তাই কলকাতা থেকে দিল্লি উড়ে গিয়েই রিভিউ মিটিং এ এখনো পর্যন্ত স্থির হয়েছে রাজ্যে এই বছর আসবে ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, এমনটাই খবর নির্বাচন কমিশন সূত্রে।