Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
ম্যাচ জিততে মোহনবাগানের ভরসা ডেভিড উইলিয়ামস ও রয় কৃষ্ণ।--ফাইল চিত্র।
দু দলই খেলছে বারোটা করে ম্যাচ। এটিকে মোহনবাগানের পয়েন্ট ২৪। তারা এখন আই এস এল পয়েন্ট টেবলে দু নম্বরে। আর নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের পয়েন্ট এখন ১৫। তারা আছে পাঁচ নম্বরে। কিন্তু এই মুহূর্তে দু দলের লক্ষ্য দু রকম। মোহনবাগান ধরেই নিয়েছে ২৪ পয়েন্ট হয়ে যাওয়ায় তারা প্লে অফ-এ চলেই গেছে। এখন তাদের লক্ষ্য যে করেই হোক লিগ পর্যায়ে এক নম্বর হয়ে এ এফ সি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা। তাদের সামনে আছে মুম্বই সিটি এফ সি। তাদের পয়েন্ট ১২ ম্যাচ খেলে ২৯। আন্তোনিও হাবাসের দলের বিশ্বাস তারা এবার লিগ পর্যায়ে এক নম্বর হতে পারে। এবং সেজন্য মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসে তারা নর্থ ইস্টকে হারানো ছাড়া কিছু ভাবছে না।
নর্থ ইস্টের অবশ্য সে রকম উচ্চাকাঙ্খী কোনও লক্ষ্য নেই। তারা আছে পয়েন্ট টেবলে পাঁচ নম্বরে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য প্লে অফ-এর চারটি টিমের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া। এ বছর তারা শুরুটা বেশ ভাল করেছিল। কিন্তু মাঝ পথে খেই হারিয়ে ফেলে। সেজন্য তাদের ম্যানেজমেন্ট স্প্যানিশ কোচ জেরার্ড নাসকে সরিয়ে ভারতীয় কোচ খালিদ জামিলকে দায়িত্ব দিয়েছে। আইজল এফ সি-কে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন করানো জামিলের এখন প্রাথমিক লক্ষ্য যে করেই হোক মোহনবাগানের থেকে একটা পয়েন্ট কাড়া।
কিন্তু কাজটা কঠিন। বারোটা ম্যাচের মধ্যে মোহনবাগান হেরেছে মাত্র দুটো ম্যাচে। জামশেদপুর আর মুম্বইয়ের কাছে। আর ড্র করেছে মাত্র তিনটিতে। জয়ের সংখ্যা সাত। তাই টিমটার মেজাজ ফুরফুরে। নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে তাদের সামান্য হলেও সমস্যা আছে। গেমমেকার এবং সেট পিস বিশেষজ্ঞ এডু গার্সিয়ার চোট। বেশ কয়েকটা ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে না। লেফট ব্যাক শুভাশিস বসুরও লেগেছে চেন্নাইয়ান ম্যাচে। তাঁকে ফিট করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। একান্ত তিনি না পারলে সুমিত রাঠিকে নামানো হবে। বাকি টিম অপরিবর্তিত থাকবে। গোলে অরিন্দম ভট্টাচার্য। চার ব্যাক প্রীতম কোটাল, সন্দেশ ঝিঙ্গন, তিরি এবং সুমিত রাঠি। মাঝ মাঠে কার্ল ম্যাকহিউ, শেখ সাহিল, মনবীর সিং এবং জাভি হার্নান্ডেজ। ফরোয়ার্ডে ডেভিড উইলিয়ামস এবং রয় কৃষ্ণ।
এমনিতে দেখতে গেলে মোহনবাগান বেশ সেট টিম। দুটো ছাড়া বাকি ম্যাচগুলো থেকে তারা পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফিরেছে। এমন কি শেষ মিনিটেও গোল করেছে। কিন্তু গোল পাওয়ার জন্য রয় কৃষ্ণের উপর নির্ভরতা তাদের ডোবাচ্ছে। ১২ ম্যাচের প্রথম পাঁচটিতেই গোল ছিল কৃষ্ণের। কিন্তু শেষ সাতটি ম্যাচে তাঁর গোল মাত্র একটি। আপ ফ্রন্টে তাঁর জন্য বল বাড়ানোর লোক নেই। সঙ্গী স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামস হয় একটু পিছন থেকে খেলছেন, না হয় তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে কৃষ্ণের। সব মিলিয়ে গোল পেতে সমস্যা হচ্ছে মোহনবাগানের। এই পরিস্থিতিতে মনবীর সিং-এর উপর অনেকটাই ভরসা করছে মোহনবাগান। কিন্তু শুরুর দিকের মনবীরকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।
আন্তোনিও হাবাসের দর্শন হল গোল বাঁচিয়ে আক্রমণে যাওয়া। নিজের দর্শন থেকে সরবেন না তিনি। তাই মোহনবাগানের খেলার মধ্যে দেখনদারি নেই। তবে পয়েন্ট তো আছে। সেটাই জরুরি। নর্থ ইস্টের ফুটবলটা অনেকটাই নির্ভরশীল ফেদেরিকো গালেগোর উপর। তিনি গেমমেকার। সুন্দর ডিস্ট্রিবিউশন। ফ্রি কিক-কর্নার নেওয়ায় পারদর্শী। এবং সঙ্গে আছে উত্তরপূর্ব ভারতের নাছোড়বান্দা তরুণদের মরণপণ লড়াই। তারা সারাক্ষণ দৌড়য়, হারার আগে হারে না। এদের সঙ্গে আশুতোষ মেহতার মতো রাইট ব্যাক আছে তাদের। ওভারল্যাপে গিয়ে সুন্দর সেন্টার করতে পারেন তিনি। সব মিলিয়ে নর্থ ইস্ট বেশ লড়াকু দল। নতুন কোচ খালিদ জামিল জানেন কী ভাবে ছোট টিমকে বড় টিমের বিরুদ্ধে লড়াই করাতে হয়। তাই প্রথম লিগে মোহনবাগান যে ২-০ গোলে জিতেছিল, ফিরতি লিগে সেটা না করতে দেওয়াই লক্ষ্য জামিলদের।