Written By অনিরুদ্ধ সরকার
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ কলকাতায় প্রথমবার হতে চলেছে ‘একুশে বই উৎসব’ । ২১ ফেব্রুয়ারি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স আয়োজিত ‘একুশে বই উৎসব’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। একুশে বই উৎসব চলবে ২১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দক্ষিণ কলকাতার তালতলা মাঠ, ইইডিএফ-এর পাশে ও সাউথ সিটি মলের কাছে হতে চলেছে এই বই উৎসব। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্সের সাধারন সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে জানান, “ ‘একুশে বই উৎসবে’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমরা উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের উপ-রাষ্ট্রদূত জনাব তৌফিক হাসান। এছাড়া সম্মানীয় অতিথি হিসেবে থাকছেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সাহিত্যিক বাণী বসু, চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন, অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়, লেখক আবুল বাশার, কবি জয় গোস্বামী সহ একাধিক শিল্পী ও সাহিত্যিক।” তিনি আরও জানান, “ বর্তমান সময়ে নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতি নিজেদের মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন খুব বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। সেই কারণেই আমাদের এই প্রচেষ্টা । মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার জন্য যারা গুলি বেয়নেটের সামনে নিজেরা বারবার বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি এই ‘একুশে বই উৎসব’ উৎসর্গীকৃত।” পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্সের সভাপতি ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ এই মেলা এবছর প্রথম কিন্তু আগামী দিনেও এই মেলা চলবে। এই মেলার সাত দিন জুড়ে প্রতিদিন বিকেলে থাকছে বাংলা ভাষা চর্চা, বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রাম, বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আকর্ষণীয় বিতর্ক ও আলোচনা সভা। এইসব আলোচনায় উপস্থিত থাকছেন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বিশিষ্ট গুণীজনেরা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে বাংলা গান আবৃত্তি ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দক্ষিণ কলকাতার এই একুশে বই মেলায় উপস্থিত থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের নামি বাংলা এবং ইংরেজি বইয়ের প্রকাশকদের স্টল এবং সরকার পোষিত প্রকাশনা সংস্থা। থাকছে প্রতিবেশী বাংলাদেশের বইও।” পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্সের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন , " ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের কথা আমরা ভুলে যায়নি। শিলচরের কথা আমরা মনে রেখেছি। মাতৃভাষা রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন বহু মানুষ। মাতৃভাষা মানে এককথায় ‘মা’। অন্যন্য বছর বইমেলা হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে কিন্তু করোনা আবহাওয়ের জন্য তা পিছিয়ে জুলাই মাসে করা হয়েছে। অন্য বছরগুলোতে ফেব্রুয়ারি মাসে সদ্য বইমেলা শেষ হওয়ায় নতুন করে একুশে বইমেলা করা যায় না তাই এবছর আমাদের এই নতুন উদ্যোগ। দিনের পর দিন আমাদের ভাষা দূষিত হচ্ছে। এককথায় ভাষা দূষণ হচ্ছে। এই ভাষা, শব্দের ব্যবহার সঠিক হওয়া উচিত। এর জন্য এই উৎসব একান্ত প্রয়োজনীয়। একুশের বই উৎসবে বিভিন্ন ধারার লোক সংগীত থাকছে। দেশজ সংস্কৃতিকে বিশেষ প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে। থাকছে ঝুমুর, ভাওয়াইয়া গান। দক্ষিণ কলকাতায় প্রথম এই মেলা হচ্ছে। সুনীল দা বেঁচে থাকাকালীন আমাদের অনেকদিন ধরে বলেছিলেন দক্ষিণে একটা বই উৎসব করার জন্য, কারণ ১ বৈশাখ হয় উত্তর কলকাতার বইপাড়ায় তাই দক্ষিণের কথা একটু ভাবা প্রয়োজন আর সেকথা ভেবেই তাই এবার আমাদের সিদ্ধান্ত দক্ষিণ কলকাতায় হবে একুশে বইমেলা।”
22nd April, 2021 09:51 pm
22nd April, 2021 07:31 pm
22nd April, 2021 06:50 pm
22nd April, 2021 05:49 pm