Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
এই দুনিয়ায় ভাই সব সত্যি, সব সম্ভব। কিন্তু কিভাবে সম্ভব, তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করো না। ঝগড়া এবং তারপর হাত ধরাধরির এই চিত্রনাট্য কে কিভাবে লিখছেন কেউ জানেন না। গালাগালি হঠাৎ করেই গলাগলি হয়ে যায়। যে চীন করোনাকালে প্রায় ঘন্টায় ঘন্টায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঘুম ছুটিয়ে দিচ্ছিল, তারাই এখন সুড়সুড় করে সীমান্ত ছাড়ছে। হঠাৎ কি হলো? কার নির্দেশে চীন হটাৎ সন্ন্যাসী হয়ে উঠলো?
ভারত – চীন দ্বন্দ্ব এ প্রথম নয়। দীর্ঘ আলাপচারিতার পর এবার লাদাখ সীমান্তে ফিরছে শান্তি। বেশ কয়েক মাস পর প্যাংগং লেকের দু'ধার থেকেই সরে গিয়েছে চীনা সৈন্যদল। এক্ষেত্রে ভারত চীন দুই দেশই সমানভাবে সহায়তা করেছিল। দুই দেশে সেনাবাহিনীই সরে এসেছে প্যাংগং লেক সীমানা থেকে। সামরিক স্তরের আলোচনার পরেই চলতি মাসের শুরুতে দুই দেশের তরফ থেকে সেনাবাহিনীকে সরিয়ে আনার কাজ চলছিল। ইতিমধ্যে প্যাংগং লেক থেকে সেনাবাহিনী সরে গেলেও হট স্প্রিং, দেপসাং এবং গোগরা সীমান্তে এখনও পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়ন করা রয়েছে। এর আগে প্যাংগং লেক থেকে চীনা সেনাবাহিনী সরানোর নির্দেশ দিওয়েছিল ভারত। এরপরেই দেপসাং থেকে চীনা সেনা সরানোর উদ্দেশ্যে বৈঠক করার কথা ভাবা হয়েছিল। চীন-ভারত সেনাবাহিনীর দশম দফায় বৈঠক অনুযায়ী, চলতি বছরের গত ২০ শে ফেব্রুয়ারি চীন সীমান্তের তরফে মোল্দো কিংবা চুষুল – এ বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই বৈঠকে, উভয় পক্ষই প্যাংগং লেকের ফ্রন্টলাইন সৈন্যদের প্রশংসা করেছে, তাঁদের মতে পশ্চিমাঞ্চলের কন্ট্রোল লাইন অবধি অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্যার সমাধানের জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। ভারত এবং চীনের মত অনুসারে, দুটি দেশের পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তের অন্যান্য সমস্যাগুলি নিয়ে সুস্পষ্টভাবে মত বিনিময় করা সম্ভব হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সীমান্তের অন্যান্য সমস্যার পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানের উদ্দেশ্যে উভয় পক্ষই তাদের রাষ্ট্রীয় নেতাদের সম্মতি দিয়েছে। সীমান্তে শান্তি বজায়ের উদ্দেশ্যে দুই দেশ একসাথে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি সকাল ১০টা থেকে একটানা রাত ২টো অবধি বৈঠক করা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি.জি.কে. মেনোস এবং ১৪ জন সামরিক সেনার নেতৃত্বে ১৬ ঘন্টার এই দীর্ঘ বৈঠক চলে। হট স্প্রিংস, গোগড়া এবং দেপসাং সমভূমির গোষ্ঠীদ্বন্দ থেকে বেড়িয়ে আসার উদ্দেশ্যে এই দীর্ঘকালীন বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠক শেষে চীনকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের কড়া নির্দেশ দিয়েছে ভারত।
দেপসাং নিয়ে এই দ্বন্দ্ব আজকের নয়। এই দ্বন্দের সূচনা হয় ২০১৩ সালে। সাম্প্রতিক সামরিক খাতের বৈঠকে ভারত বলেছে, এলএসি জুড়ে সমস্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান করা উচিত। গোগড়া এবং হট স্প্রিংস – থেকেই সমাধানের প্রাথমিক উদ্যোগটি নেওয়া হবে। দেপসাং - এর জটিল সমস্যার সমাধান কয়েকদিনে করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল দেপসাং থেকে চীনা বাহিনী সরানো নিয়ে বিস্তর আলোচলার প্রয়োজন। সীমান্ত অঞ্চলের এই সমস্যার সমাধানে লাগতে পারে বেশ খানিকটা সময়।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে অন্য জায়গায়। হঠাৎ হলো কী চীনের? প্রথমত,করোনার সময়েই হঠাৎ করে সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হলো কেন? শুরুতেই কেন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান কেন করা গেলো না? ঠিক কত পরিমাণ অর্থ খেসারত দিতে হলো ভারত সরকারকে? সেনা সরঞ্জাম এবং সমরাস্ত্র কেনার জন্য জলের মতো হাজার হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে গেল। করোনা মিটে যেতেই হঠাৎ করে চীন একেবারে সুবোধ বালক হয়ে গেল কেন? কোন বিষয়ে হঠাৎ করে মতের মিল হয়ে গেল? প্রশ্নগুলো সহজ, উত্তরও তো জানা।
22nd April, 2021 09:51 pm
22nd April, 2021 07:31 pm
22nd April, 2021 06:50 pm
22nd April, 2021 05:49 pm