Written By কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
মাত্র ১ মাস চেয়ারে বসেই বাইডেন বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ট্রাম্পের খামখেয়ালি সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছেন এবং সুদূরপ্রসারী লাভের আসায় কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সত্যিই কি বাইডেন পারবেন? প্রশ্ন উঠে গেছে এখনই। প্রেসিডেন্ট হয়ে হনিমুন পিরিয়ডে গ্যালারি শো চলছে না তো আর তার জেরে দেশের অর্থনীতি আবার মুখ থুবড়ে পড়বে না তো? আমেরিকা কি সত্যিই পারবে করোনা যুদ্ধ জিততে?
রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়ে মাত্র এক মাসের মাথায় ২০০৯ সালের আর্থিক সঙ্কটের চেয়েও বড় কোনও অর্থনৈতিক ক্ষতির পথে হাঁটছেন না তো জো বাইডেন? জলবায়ু পরিবর্তনের নীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মতো ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন নিয়ম নীতিকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলেছেন তিনি। তাঁর আইনি ব্যবস্থায়, সামান্য সময়ের মধ্যেই অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক কোভিড ১৯ টীকা বিতরণের হার ৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজনৈতিক লড়াই এড়াতে, গণ ভোটারদের আবেদনের মতো নীতিগুলিতে মনোনিবেশ করার কথা ভেবছে হোয়াইট হাউস। রিপাবলিকানদের আক্রমণকে উপেক্ষা করলে সামনের কয়েক মাসেই তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রিপাবলিকানরা দাবি করেছেন, বিপুল পরিমাণে টিকাকরণের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক খাতে নজর দিতে হবে। প্রাক্তন ডেমোক্র্যাটিক সিনেট মেজরিটির প্রধান কর্মকর্তা হ্যারি রেডের শীর্ষ সহযোগী জিম ম্যানলি জানিয়েছেন, রিপাবলিকানরা সামান্য কোনও সমস্যার সূত্র ধরেই এই সোচ্চার হয়েছেন।
কর্মপদে আসার পর থেকে জো বাইডেন বেশকিছু নীতি নিয়মে পরিবর্তন এনেছেন। এছাড়াও বেশ কিছু অবিচ্ছিন্ন নীতিগত লড়াইগুলি রয়েই গিয়েছে। অ্যামেরিকান নাগরিকত্ব, ভোটের সহজলভ্যতা, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের কতটা অর্থ প্রদান করা উচিৎ এবং অন্যান্য সামাজিক নীতি নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই এখনও। পাশাপাশি, বাণিজ্য শুল্ক থেকে শুরু করে চীন নীতি, প্রযুক্তি পর্যবেক্ষণের মতো জটিল বিষয়গুলি ইতিমধ্যে হোয়াইট হাউসে পর্যালোচনাধীন রয়েছে। ইকোনমিক স্টিমিউলাস প্যাকেজ পাশ করানোর পক্ষে উঠেপড়ে লেগেছে রিপাবলিকানরা। এই বিল পাসের জন্য কেবলমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের প্রয়োজন, তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ডেমোক্র্যাটকে হোয়াইট হাউসের পক্ষে থাকা দরকার। আশঙ্কা করা হচ্ছে বিলে, ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১৫ ডলার করার নির্দেশ থাকবে, যা ডেমোক্র্যাটদের হতাশার কারণ। রিপাবলিকান, পল শুমাকার বলেছেন, কর এবং ব্যয়কে ঐক্যবদ্ধ করতে পারতেন জো বাইডেন। এই বিষয়টিকে উপেক্ষা করেই জো বাইডেন দেশবাসীকে হতাশ করেছে। বিরোধিতার সুর চড়িয়ে বলেছেন, 'তিনি হানিমুনের সময়টুকু উপভোগ করছেন, তবে সকলেই জানেন যে হানিমুনের অবসান হতে চলেছে,'
হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে জানা যাচ্ছে, নীতিমালার আগামি মাসগুলিতে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন সরকার। তাঁদের বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস রিপাবলিকানরা এই বিষয়টিকে সমর্থন করবে। জো বাইডেনের প্রারম্ভিক পোলিং নম্বরগুলি চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দেয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রয়টার্স – এর সমীক্ষায় দেখা গেছে, রিপাবলিকানদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ আমেরিকানরা প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেনকে অনুমোদন দিয়েছে এবং প্রায় ৫৬ শতাংশ অ্যামেরিকান রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাইডেনের কার্যকারিতাকে সমর্থন করেন। হোয়াইট হাউসের দ্বিপক্ষীয় ফলাফল অনুযায়ী দেশ এখনও উন্নয়নের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি প্রায় ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্য ট্যাগকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি খাতে ট্যাক্স বৃদ্ধি প্রয়োজন বলেই মনে করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কথোপকথনের মধ্য দিয়ে অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ভর্তুকিও এর অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
কিন্তু এর পরেও উঠছে অনেক প্রশ্ন। ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেহাল অবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে গত এক বছরে বিপুল ব্যয়, বেহাল কোষাগার - এই এতো সমস্যা ঠিক কিভাবে সামাল দেবেন বাইডেন? তার তো কোনো দিশা দেখা গেলো না এতদিনে। অন্যদিকে চীন এর সঙ্গে সম্পর্ক। বাণিজ্য নীতি, জার্মানি, আফগানিস্তানের মাটিতে সৈন্য মোতায়েনের বিষয়গুলিও যথেষ্ট সংবেদনশীল হয়ে রয়েছে। নাহ, শান্তিতে আর দিন কাটানো হলো না মার্কিন প্রেসিডেন্টের।