Written By ঋষিগোপাল মণ্ডল
তাঁর নাম অমিতরঞ্জন সুর। তাঁর গলায় সুর তাল লয় অনায়াসে খেলা করে। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরে গেলে কখনো চায়ের দোকানে কখনো স্টেশনে দেখা মিলবে এই গান পাগল সুরসাধকের। যাঁর পদবীতেই ‘সুর’, তিনি কি করে সুরের সঙ্গ ছাড়তে পারেন! তাই এখনও গুসকরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় গান পাগল বলতে লোকে একডাকে অমিতরঞ্জনকেই চেনেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় গানের টানে ঘর ছেড়ে গুসকরা থেকে হাজির হয়েছিলেন কলকাতায় বিখ্যাত শিল্পী ভূপেন হাজারিকার বাসভবনে। পরিচয় হবার পর ভূপেন হাজারিকার বাড়িতে বিভিন্ন হিসেবের কাজ করতেন অমিত রঞ্জন। সঙ্গে চলত সুর সাধনা। এভাবেই ভূপেন হাজারিকার স্নেহধন্য হয়ে ওঠেন তিনি। বেশ কয়েক বছর ভূপেন হাজারিকার বাড়িতে কাজ করার পর বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী যখন অসমে চলে যান তখন অমিতরঞ্জনও গুসকরায় ফিরে আসেন। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় গান গেয়ে বেড়ান তিনি। পরিবারে এক মানসিক প্রতিবন্ধী ভাই ছাড়া আর কেউ নেই। আক্ষরিক অর্থেই অমিত রঞ্জনের ‘ভোজনং যত্রতত্র’। জীবনে এত প্রতিকূলতা এবং দারিদ্র্য সত্বেও সুর ছেড়ে যায়নি অমিতরঞ্জনকে। অমিতরঞ্জনও সুর এবং ভূপেন হাজারিকার সঙ্গ-স্মৃতিকে ভুলতে পারেননি। গুসকরা স্টেশন এবং বাজার এলাকায় যদি দেখেন কেউ আবেগ ঢেলে উদাত্ত কণ্ঠে গাইছেন ভূপেন হাজারিকার বিখ্যাত গান ‘আমি এক যাযাবর’ তাহলে বুঝে নেবেন তিনি ভূপেন হাজারিকার ডাই-হার্ড ফ্যান সুর পাগল অমিত রঞ্জন সুর।