Written By ঋতিকা দাস
বাংলায় আসল পরিবর্তন চান মোদী। রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশ থেকে বারংবার এই কথাই বলতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এদিন দিল্লি থেকে বিমানে করে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে চপারে করে প্রথমে কলকাতার রেসকোর্স এবং তারপর সেখান থেকে গাড়ি করে ব্রিগেডে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর মঞ্চে উঠে সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বন্দেমাতরম দিয়েই ভাষণ শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী। এরপর তিনি বলেন, এর আগেই তিনি কলকাতায় জনসভা করে গেছেন। কিন্তু এভাবে সাড়া জাগানো জনসভা কখনও হয়নি। এরপর তিনি বলেন, এই ব্রিগেডের মাঠ থেকে বাংলার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে মোদী বলেন, বিজেপিকে গুণ্ডা, দৈত্য বলছেন দিদি। বিজেপিকে এতো ভয় কেন ওনার ? দিদি ও তাঁর দলের ছড়ানো পাঁকেই ফুটছে বিজেপির পদ্ম। তারপরেই সরাসরি বলে দেন, দিদি নিজেও কিছু করছেন না আর অন্যকেও করতে দিচ্ছেন না। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু দিদি এবং তাঁর দল সেই বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছেন। বাংলার মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু তা বলে বাংলার মানুষ ভেঙে পড়েননি। বরং পরিবর্তন চাইছেন তাঁরা। এরপর মোদী বলেন, এক সময় সিপিএম কংগ্রেসকে বলত, কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও। কিন্তু সেই হাত আবার সাদা হয়ে গেল কী করে ? ''আজ গোটা দেশ শুনুক, দুর্নীতি আর নয়, তোলাবাজি আর নয়, কাটমানি আর নয়, সিন্ডিকেট আর নয়, বেকারত্ব আর নয়, হিংসা আর নয়, আতঙ্ক আর নয়, তুষ্টিকরণ আর নয়, অন্যায় আর নয়। এত জোরে বলুন যাতে আপনাদের রাগ, ক্ষোভ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে'', বলেন মোদী। তিনি জানান যে, বাংলা চায় শান্তি, উন্নতি। কলকাতাকে তিনি স্মার্ট সিটি করার কথা বলেন। এর সঙ্গে এখানে উড়ালপুর গড়া, ঝুপড়িবাসীদের জন্য পাকা বাড়ি, ঠেলাওয়ালাদের স্বনিধি যোজনার আওতায় আনার কথা বলেন। বাংলায় যে ভাবে গণতন্ত্রকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজেপি তার পুনর্নির্মাণ করবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদী।
এদিনের ব্রিগেডের সভায় অন্যতম আকর্ষণ ছিল মিঠুন চক্রবর্তীর বিজেপিতে যোগদান। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর মিঠুন বলেন, ''আমি বাঙালি। আমি গর্বিত আমি বাঙালি। ভুলে যাবেন না দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের ১৫০ তম বছর এটা। ভুলে যাবেন না রানি রাসমণিকে, এঁরাই আসল বাঙালি। বাংলার সব কিছুতে অধিকার আপনাদের। কেউ তা ছিনিয়ে নিতে এলে, আমাদের মতো কিছু লোক দাঁড়িয়ে যাবে। মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে শুনেছেন আগেই। এ বার নতুন কথা শুনুন, আমার নাম মিঠুন চক্রবর্তী। আমি যা বলি, তা করে দেখাই। আমি জলঢোড়াও নয়, বেলোবোড়াও নই। আমি একটা কোবরা। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি। এ বার কিন্তু সেটাই হবে। দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন। বিশ্বাস রাখুন। দাদা কখনও ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়নি। এক ছোবলে ছবি। কেউ পালাতে পারবে না।'' এর সঙ্গে তিনি বলেন,''আজকের দিনটা আমার কাছে একটা স্বপ্নের মতো। এই জন্য বলছি স্বপ্ন, আমি আসছি জোড়াবাগানের দিক থেকে, তার দু’দিকটাই অন্ধকার। থানার পিছনে না দেখলে জায়গা খুঁজে পাওয়া যেত না। সেখান থেকে ভারতবর্ষের তাবড় নেতাদের সঙ্গে এই মঞ্চে দাঁড়াব ভাবিনি, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আসছেন। স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা কিছু করব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমঞ্চে থাকাও তো স্বপ্নের।''