Written By অনিরুদ্ধ সরকার
নিউ মার্কেটের 'নাহুমস অ্যান্ড সনসে'র নাম একডাকে সবাই চেনে কারণ তারা ১১৬ বছর ধরে বাঙালিকে কেক খাইয়ে আসছে। শুধু বাঙালিই বা বলি কিভাবে! সেই ১৯০২ সালের কথা, কলকাতা তখন ভারতের রাজধানী।
সেসময় সূদূর বাগদাদ থেকে নাহুম ইজরায়েল কলকাতায় এসে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই নাহুম বেকারির। তারপর আট থেকে আশি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এসেছেন শুধুমাত্র কেকের টানে। এও এক ঐতিহ্য। ভালোবাসা আর ঐতিহ্য এই দুই মিলিয়ে নাহুম নিজেই তৈরি করে ফেলেছে ইতিহাস।
১৯০২ এর 'নাহুমস অ্যান্ড সনস'কে খুঁজে পেতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। কলকাতা কর্পোরেশনের পাশ দিয়ে নিউ মার্কেটের ভেতর 'নাহুমস অ্যান্ড সনস'। দোকানের ভেতরে ঢুকলেই আপনি এর আভিজাত্য বুঝতে পারবেন। খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি কেক সাম্রাজ্যে এসে পড়েছেন। যার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে শুধু কেক আর কেক। কেক- পেস্ট্রির সম্ভার দেখে আপনাকে শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে হবে। আর বড়দিনের আগে এলে আপনাকে অবশ্যয় লাইন দিতে হবে। একাধিক ভিন্নস্বাদের কেক মিললেও নাহুমের ফ্রুট কেকের খ্যাতিই সর্বাধিক। ফ্রুট কেক ছাড়াও নাহুমে দেশি-বিদেশি ভিন্ন স্বাদের একাধিক কেক রয়েছে, যার নাম বলে শেষ করা যায় না। 'নাহুমস অ্যান্ড সনসে' লেমন টারট, ভিন্ন স্বাদের প্যাটিস, চিকেন পাফ, চকলেট ফাজ ছাড়াও রয়েছে পেস্ট্রির এক বিপুল সম্ভার।দোকান জুড়ে কর্মচারীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মত। কেউ কেউ তো কেক কিনে তা পাঠাচ্ছেন আমেরিকা ইউরোপের মত দেশের বিভিন্ন জায়গায়। দোকানের ভেতরে বসার কোনোরকম ব্যবস্থা নেই কিন্তু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আপনি দিব্যি খেতে পারেন। প্যাকিং এর উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে। দেশি- বিদেশি ভিন্ন স্বাদের জ্যাম, জেলি ও টার্টের ব্যবহার এখানকার কেকের বিশেষত্ব।
পুরনো কলকাতার বুকে আন্তর্জাতিকমানের মানের কেক পেস্ট্রি খেতে সেরা গন্তব্য 'নাহুমস অ্যান্ড সনস'। বেকারির বর্তমান মালিক আইজ্যাক নাহুমের কথায়, "কাস্টমার স্যাটিশফেকশন আমাদের শেষ কথা।"
এক কেক গ্রাহক জানালেন, "কলকাতার সবচেয়ে পুরানো এই কনফেক্সনারিতে আপনার নিজের পছন্দের রুটি আপনি নিজের ইচ্ছেমত স্বাদ রেসিপি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। সেকারণেই নাহুম আসা। এত স্বাদের বৈচিত্র আর কোনো কেকের দোকানে নেই " অতএব আর দেরি নয়, এবার ২৫ ডিসেম্বরের খ্রিসমাস সেলিব্রেশনে আপনার পছন্দের তালিকায় থাকুক 'নাহুমস অ্যান্ড সনসে'র কেক। দোকান খোলা থাকে সকাল সাড়ে ন'টা থেকে রাত আটটা। আর কি কেক খাবেন সেটা না হয় আপ নাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম। তবে ভালো কেক খেতে হলে একটু পকেট ভারি করে আসবেন।