Written By অনিরুদ্ধ সরকার
লিখতে লিখতে যে লেখক হওয়া যায় তার প্রমাণ দিলেন শ্যামসুন্দর বেসরা। দু-আড়াই বছর ধরে লিখেছিলেন ‘মারোম’ নামের উপন্যাসটি। শ্যামসুন্দর তাঁর ‘মারোম’ উপন্যাসটি লেখা শুরু করেছিলেন ট্রেনে যেতে যেতে। লেখার শুরুবাদ ২০১৪ নাগাদ যা শেষ হয় ২০১৬ র আশপাশে আর ২০১৮ তে সেই উপন্যাসই পাচ্ছে এবছর সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরষ্কার। সাঁওতালি ভাষায় লেখা উপন্যাস ‘মারোম’এ রয়েছে সাঁওতাল পরগণার আর্থ সামাজিক অবস্থার কথা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সেখানকার শিল্প প্রসঙ্গও উঠে এসেছে ভিন্ন আঙ্গীকে। পেশায় একজন রেলকর্মী কিভাবে দুবছর ধরে হাজারো প্রতিবন্ধকতার মাঝে চাকরি করতে করতে উপন্যাস লিখলেন সে ঘটনা বেশ অনুপ্রেরণার। শ্যামসুন্দরের কথায়, “মারোম প্রকাশের পর রেলের এক অফিসার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তুমি লেখো কখন ? উত্তরে বলেছিলাম কেন! রেস্ট রুমে বসে, ট্রেনে যেতে যেতে।” শ্যামসুন্দর বেসরা পেশায় পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের চিফ ইনস্পেক্টর সারাদিনই হাজারো কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকেন কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও নিয়মিত লেখালেখির মধ্যে রয়েছেন। লেখালেখির শুরু স্কুল-কলেজ থেকেই। কিন্তু নিয়ম বেঁধে ছকে লেখার সূত্রপাত আটের দশকে চাকুরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে। রেলে চাকরির সুবাদে অনেক কাছ থেকে একাধিক মানুষের সাথে মেলামেশার সুযোগ পেয়েছেন, দেখেছেন বিভিন্ন মানুষের আচার আচরণ জীবনযাত্রা। লেখক শ্যামসুন্দর বেসরার দুখানি বই, ‘দামিন রিয়াস’, ‘দুলার খাতির’ ইতিমধ্যে সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়েরর পাঠ্য তালিকাভুক্ত। ড.বিআরআম্বেদকর ফেলোশিপ ছাড়াও শ্যামসুন্দর বেসরা পেয়েছেন একাধিক রাজ্যস্তরের পুরস্কার। রেলের এক টিকিট পরীক্ষক এমএস ধোনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হয়েছেন রেলের আরেক টিকিট পরীক্ষক শ্যামসুন্দর বেসরা পেলেন এবছর সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরষ্কার। এর থেকে বোঝাই যায়, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আর ইচ্ছে আর চেষ্টা থাকলে তো অনেককিছুই হয়।