Written By শাজাহান আলি
ফের ডাইনি সন্দেহে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার অন্তর্গত ঈশ্বরপুর গ্রামে রবিবার সারাদিন ৫ মহিলাকে ডাইনি সন্দেহে সালিশি বসিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১ জনের। পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ সহ আহত বাকি ৪জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঈশ্বরপুর গ্রাম আদিবাসী অধ্যূষিত গ্রাম। ঈশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রকম শারিরীক সমস্যা ও উপসর্গ দেখা দিচ্ছিল। তাই স্বাস্থ্য দফতর বা চিকিৎসার কথা না ভেবে আদিবাসীরা তাঁদের ধর্মগুরুর পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অঞ্জলি মান্ডি নামে এক মহিলা আদিবাসীদের এই সমস্যা সমাধান করতে গত ৪দিন আগে ওই গ্রামে আসেন। মন্ত্রতন্ত্র পড়ে তিনি গ্রামবাসীদের জানান, গ্রামে ৫ জন মহিলা ডাইনি রয়েছে। যাদের প্রভাবে এই কাণ্ডগুলি ঘটছে। তাঁদের কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে গ্রামে একটি মন্দির প্রতিস্থাপন করতে হবে, সেই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এরপর তাঁর পরামর্শে গ্রামের সন্দেহজনক ওই ৫ জন মহিলাকে গ্রামবাসীরা ধরে এনে সালিশি সভায় বসে রবিবার। সালিশি সভা বসিয়ে গ্রামবাসীরা ওই ৫ জনকে নিজেদের ডাইনি বলে স্বীকার করতে বাধ্য করে। সেই সঙ্গে বেধড়ক মারধর চলে। মোটা টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়। এই ঘটনায় আদরিনী হাঁসদা (৫০) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। দুপুর নাগাদ ঘাটাল থানার পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়। আদিবাসীরা পুলিশের পথ আটকালে এসডিপিও কল্যাণ সরকার বিশাল বাহিনী নিয়ে গ্রামে ঢোকেন। অবশেষে পুলিশ আদরিনির মৃতদেহ উদ্ধার করে। আহত বাকি ৪ জনকে উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।