ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর সহ বেশ কিছু জেলার। সেখানকার বাসিন্দাদের দুয়ারে ত্রাণ পৌঁছে দেবে সরকার৷ বৃহস্পতিবার এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩ জুন থেকে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচি চালু হচ্ছে৷ কীভাবে এই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে তা এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেন, ‘আগামী ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবিরে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন নেওয়া হবে। প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ক্যাম্প করবে সরকার। সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারেন। এই আবেদন খতিয়ে দেখা হবে ১৯ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। তার পরে ১ জুলাই থেকে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে যাবে।’এই কাজের জন্য তাঁর সরকার ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতরের সচিবদের থেকে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,’প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরে ফিল্ডে গিয়ে খতিয়ে দেখলে আসল ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। তবে জল না নামলে সার্ভে সম্ভব নয়। তাই একটু দেরি হবে। টর্নেডোর কারণেও বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর বাড়ির ক্ষতি হয়েছে৷’ সেক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১.১৬ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০০ কোটি টাকা।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আরও জানান, ‘ঘুর্ণিঝড় যশের তাণ্ডবে ১৩৪টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ৩ লক্ষেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত।’ জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে দীঘা থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে চাইবেন। শনিবার সকালে দীঘার পর্যদুস্ত এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন মমতা।
অপরদিকে,যশ ঘূর্ণিঝ়ড় পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কলাইকুণ্ডাতে যাবেন তিনি। কলাইকুণ্ডাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকের পাশাপাশি, মু্খ্যমন্ত্রীকে সঙ্গী করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।