Written By অনির্বান বন্দ্যোপাধ্যায়
বর্ষায় ডিঙা ভাসানোর কথা বলেছিলাম আগের সপ্তাহে। বৃষ্টির রিমঝিম যদিও মাটির বুকে সেইভাবে ঝরে পড়ছে না এখনো, কিন্তু মনের ভেতর বেজে চলা মল্লারের সুর, সে জলতরঙ্গ রোধিবে কে! আর তাই, ভিজে মাটির সোঁদা গন্ধ গায়ে মেখে, এবারের বেড়ানোও সেই জলের ধারে।
হ্যাঁ, মাইথনের পর এবার মুকুটমনিপুর। বাঁকুড়া জেলার ছোট্ট এই টুরিস্ট স্পটে, বনের সবুজ আর নীল জল যেন হাত ধরাধরি করে মিলেছে একসাথে। বর্ষার মেঘছায়া ভেসে চলেছে তার উপর দিয়ে।
মুকুটমনিপুরের জলাধারই এখানে বেড়ানোর আসল কথা। কুমারী আর কংসাবতী নদীর জলে বাঁধ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিশাল জলাধার। মাইথনের মতো নৌকো নিয়ে ভেসে পড়া যায় এখানেও। না হলে, এলোমেলো ঘুরে ফেরা জল ছুঁয়ে। হয়তো বা বৃষ্টি আসবে, ঝাপসা হয়ে আসবে দূরের দ্বীপ, রাঙা কাঁকরের বুকে বৃষ্টিফোঁটা ছিটকে পড়ে ভিজিয়ে দেবে মন।
জলাধারের আশেপাশেই আছে ছোট ছোট আদিবাসী গ্রাম। ইচ্ছে হলে একটুখানি ঘুরে আসা যায় সেখান থেকেও। অন্যরকম সব বেঁচে থাকার গল্প ছুঁয়ে, তারপর আবার ফিরে আসা হোটেলে। নয়তো চলুন ডিয়ার পার্ক, বা পরেশনাথ পাহাড়ে। তবে আমি বলব, সম্ভব হলে গাড়ি ভাড়া করে একবারটি ঘুরে আসবেন সুতানের জঙ্গল থেকে। দূর আছে। যাওয়া-আসা নিয়ে প্রায় একশো কুড়ি-তিরিশ কিলোমিটার। একসময় এখানে মাওবাদীদের কারনে নানা রাজনৈতিক সমস্যাও ছিল। সেসব একটু খোঁজ নিয়ে নেবেন। কিন্তু যেতে যদি পারেন, সেই বিনিয়োগ বৃথা যাবে না। বনের সবুজ চাঁদোয়ার নিচে হেঁটে যেতে যেতে, যখন ভিজে হাওয়ায় ভরে উঠবে আপনার বুক, পাখির ডাকে ধুয়ে যাবে কান, মনে হবে, এই শ্রাবণে ভাগ্যিস এসেছিলাম!
কীভাবে যাবেনঃ ট্রেনে, বাসে বা গাড়িতে বাঁকুড়া শহর। সেখান থেকে সড়ক পথে মুকুটমনিপুর। সময় লাগবে ঘণ্টা তিনেক।
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
কোথায় থাকবেনঃ মুকুটমনিপুরে থাকার জন্য আছে নানা দামের হোটেল আর রিসর্ট
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….